সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পড়শি দেশ থেকে এসে ভারতের শান্তি নষ্ট করতে এলে কাউকে রেয়াত হবে না। পাকিস্তানে পালিয়েও পার পাবে না জঙ্গিরা। সেদেশে ঢুকে জেহাদিদের খতম করার হুঁশিয়ারি দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। ভারত যে কখনও অন্যদেশে হামলা চালায় না সে বিষয়টিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু দেশে জেহাদের বিষ ছড়ানোর চেষ্টা করলে যেকোনও পরিস্থিতিতেই তার পালটা দিতে পিছপা হবে না দিল্লি তা পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজনাথ।
পাকিস্তান জঙ্গিদের চারণভূমি। বিগত কয়েক দশক ধরে ভারতে সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে। লাগাতার জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে উপত্যকা অশান্ত করার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। যার কড়া জবাব দিচ্ছে দিল্লিও। শুক্রবার এক সর্বভারতীয় বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে রাজনাথ সিংয়ের একটি সাক্ষাৎকার সম্প্রচারিত হয়। সেখানেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, "পড়শি দেশ থেকে এসে কোনও সন্ত্রাসবাদী যদি ভারতের শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করে তাহলে কড়া জবাব দেওয়া হবে। জঙ্গিরা যদি পাকিস্তানে পালিয়ে আশ্রয় নেয়, সেক্ষেত্রে পাকিস্তানে ঢুকে তাদের খতম করা হবে (ঘুস কে মারেঙ্গে)। ভারতের সে ক্ষমতা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সত্যি কথাই বলেছেন। পাকিস্তানও সে কথা জানে।"
[আরও পড়ুন: বার বার বাদ পড়েছেন ভোটার তালিকা থেকে, এই প্রথম ভোট দেবেন ৯২-এর বৃদ্ধ]
বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়। বিদেশের মাটিতে নাকি বেছে বেছে জঙ্গিদের নিকেশ করছে ভারত। রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৯ সাল থেকে মোট ২০ জঙ্গিকে নিকেশ করেছে ‘র’। এই দাবির সপক্ষে পাকিস্তান সরকারও বেশ কিছু প্রমাণ দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটিকে। ইসলামাবাদের মতে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে অবস্থিত ভারতের স্লিপার সেলই পাকিস্তানে ঢুকে জঙ্গিদের খুন করেছে। ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ধাঁচেই এই অপারেশন চালাচ্ছে ‘র’। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরই প্রতিরক্ষামন্ত্রী এদিনের সাক্ষাৎকারে বলেন, "ভারত কখনও অন্যদেশে হামলা চালানোর কথা ভাবে না কিংবা তাদের ভূখণ্ড দখল করতে চায় না। কিন্তু কেউ যদি ভারতকে চোখ রাঙায় তা বরদাস্ত করা হবে না।"
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে খুন হচ্ছে একের পর এক কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী। পড়শি দেশটিতে গত দুবছরে অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীর হাতে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত কুড়ি জন জেহাদি। এছাড়া মুম্বই হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদের উপরও বোমা হামলা হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এরা প্রত্যেকেই ছিল ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টে। শুধু পাকিস্তানই নয় কানাডার মাটিতেও খুন হয়েছে খলিস্তানি জঙ্গি। গত বছর কুখ্যাত খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার ঘটনায় আঙুল উঠেছিল ভারতের দিকে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সাফ অভিযোগ আনেন, নিজ্জর খুনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে ভারত সরকার। যা নিয়ে তলানিতে ঠেকেছে দুদেশের সম্পর্ক। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই জল্পনার পালে হাওয়া লেগেছে।
কিন্তু দ্য গার্ডিয়ানের রিপোর্টে যা যা দাবি করা হয় শুক্রবার তা নস্যাৎ করে দেয় কেন্দ্র। ক্ষোভ প্রকাশ করে বিদেশমন্ত্রক সাফ জানিয়ে দেয়, বিদেশের মাটিতে গিয়ে খুন করা ভারত সরকারের নীতি নয়। দ্য গার্ডিয়ানের এই রিপোর্টে যা অভিযোগ আনা হয়েছে সবটাই ভুয়ো। বিদ্বেষমূলক মানসিকতা থেকে ভারত বিরোধী প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে এই রিপোর্টে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরও বলেন, বিদেশি নাগরিকদের বেছে বেছে হত্যা করা মোটেও ভারতের নীতি নয়।