shono
Advertisement

Breaking News

ছাগলের কানেই শাপমুক্তি, অঙ্গবিকৃতি থেকে মুক্তি পেলেন ২৫ জন

অসাধ্য সাধন আর জি করের চিকিৎসকদের। The post ছাগলের কানেই শাপমুক্তি, অঙ্গবিকৃতি থেকে মুক্তি পেলেন ২৫ জন appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:51 AM Jan 10, 2019Updated: 12:18 PM Jan 10, 2019

গৌতম ব্রহ্ম: মানুষের শরীরে লাগল ছাগলের কান! একজন- দু’জন নয়, ২৫ জনের দেহে জুড়ল ‘লম্বকর্ণ’। আর এই অসাধ্য সাধন করে কলকাতাকে ফের চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণার ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে দিল শ্যামবাজারের আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

Advertisement

জন্ম থেকেই ডান কান গোটানো ছিল বসিরহাটের সুমনের। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলে ‘মাইক্রোশিয়া’। ‘ক্লেফট ঠোঁট’ নিয়ে মানসিক অশান্তিতে ছিল বাঁকুড়ার বারো বছরের মৌমিতা। চাঁদের মতো মুখে কাটা ঠোঁটের অভিশাপ। সুমনকে আর মাফলারের আড়ালে কান লুকোতে হয় না। মৌমিতাকেও লুকোতে হয় না মুখ। প্লাস্টিক সার্জারি করে দু’জনের শরীরেই প্রতিস্থাপন করা হয়েছে ছাগলের কানে থাকা তরুণাস্থি। তাতেই শাপমোচন!

হ্যাঁ। ক্লেফট লিফ, প্যালেট (তালু কাটা), গুটিয়ে যাওয়া কান (মাইক্রোশিয়া) ঠিক করতে ছাগলের কানের তরুণাস্থি ব্যবহার করছেন আর জি করের প্লাস্টিক সার্জনরা। নেতৃত্বে বিভাগীয় প্রধান ডা. রূপ ভট্টাচার্য। দুই ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের ২৫ জন রোগীর শরীরে জায়গা পেয়েছে লম্বকর্ণের তরুণাস্থি বা কার্টিলেজ। এমনটাই জানালেন আর জি করের অধ্যক্ষ ডা. শুদ্ধোদন বটব্যাল।

ব্যবহারের অযোগ্য হাওড়া স্টেশনের শৌচাগার, বিপাকে যাত্রীরা  ]

তরুণাস্থির বিকল্প নিয়ে অনেকদিন ধরেই চিন্তাভাবনা করছিলেন বিজ্ঞানীরা। এতদিন প্লাস্টিক ও সিলিকনের ইমপ্লান্ট ব্যবহার করা হত। কিন্তু এই দু’টো বস্তুর কোনওটির সঙ্গেই মানবশরীর বেশিদিন মানিয়ে চলতে পারছিল না। তাছাড়া সিলিকনে সহজে সংক্রমণ হয়। দামও অনেক বেশি।টেকেও না বেশি দিন। তাই হন্যে হয়ে তরুণাস্থির সুলভ, নমনীয় ও মজবুত বিকল্পের খোঁজ চলছিল পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে। কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে একটি টিম তৈরি করা হয়। যার অন্যতম সদস্য ভেটেরেনারি সার্জন ডা. শমিত নন্দী ও মাইক্রোবায়োলজিস্ট ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদার। সঙ্গে ইমিউনোলজিস্ট বিশেষজ্ঞরা। ডা. নন্দী জানালেন, প্রথমে ছাগলের কান থেকে তরুণাস্থি বের করা হয়। তারপর বিভিন্ন রাসায়নিক পদ্ধতির সাহায্যে কার্টিলেজের ইমিউনোজেনেসিটি নষ্ট করে করা হয়। দেখা যায়, তার পরেও কার্টিলেজের কাঠামো ও বস্তুগুণ অটুট। শুধু সেলুলার প্রপার্টি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সে তো হল। কিন্তু মানুষের শরীর ছাগলের কার্টিলেজ গ্রহণ করবে তো? জীবন্তুর শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর মানবদেহে প্রয়োগের জন্য বল আসে আর জি করের কোর্টে। প্লাস্টিক সার্জনরা ২৫ জন রোগীকে বেছে নেন। প্রত্যকেরই নাক এবং কানের কাঠামোতে সমস্যা আছে। রূপবাবু জানালেন, “রোগীদের লিখিত অনুমতি নিয়ে ছাগলের তরুণাস্থি ব্যবহার করে অস্ত্রোপচার করা হয়। নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষা করে দেখা গিয়েছে, কয়েকজন বাদে সবার ক্ষেত্রেই খুব ভাল রেজাল্ট। প্রকল্পটি পুরোটাই হয়েছে ভারত সরকারের জৈবপ্রযুক্তি মন্ত্রকের আর্থিক সাহায্যে। প্রকল্প রিপোর্ট তাদের পাঠানো হয়েছিল। ওরা আমাদের কাজের প্রশংসা করেছেন। আরও তিন-চার বছর আমরা কাজটা করতে চাই।”

২০১৩ সাল থেকে এই তরুণাস্থি-প্রকল্প চলছে। ক্লেফট লিফ (কাটা ঠোঁট), প্যালেট (তালু কাটা), গুটিয়ে যাওয়া কানের (মাইক্রোশিয়া) পুনর্গঠনে এই তরুণাস্থি ব্যবহৃত হচ্ছে। পাঁচ বছরেরর শিশু থেকে পঁচিশের যুবা। দুই ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের মানুষই বেশি। মায়ের শরীরে ফলিক অ্যাসিডের অভাব থাকলে সমস্যাগুলি দেখা হয়। গ্রামাঞ্চলে এই ধরনের রোগী বেশি মেলে। রূপবাবু জানালেন, “আগুনে পোড়া রোগী বা কুষ্ঠ রোগীর ক্ষেত্রে এখনও এই ছাগলের তরুণাস্থি ব্যবহার করা হয়নি। কারণ এই তরুণাস্থির খুব ভাল আচ্ছাদন দরকার। যা এই দুই রোগীর ক্ষেত্রে পাওয়া মুশকিল।”

প্রত্যাঘাত কাজে এল না, হরতালে কর্মীদের নামাতে না পেরে হতাশ বামেরা ]

The post ছাগলের কানেই শাপমুক্তি, অঙ্গবিকৃতি থেকে মুক্তি পেলেন ২৫ জন appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement