জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: ভূত তাড়ানোর নামে নাবালককে গাছের ডাল দিয়ে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠল ওঝার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে গোপালনগর মামুদপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। যুক্তিবাদী মঞ্চের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রাতেই ওই বালককে উদ্ধার করে। বুধবার যুক্তিবাদী মঞ্চের পক্ষ থেকে গোপালনগর থানায় ওই ওঝার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করেছে।
পুলিশ ও যুক্তিবাদী মঞ্চের তরফে জানা গিয়েছে, বছর ১৫-র সম্প্রতি মাছ ধরতে গিয়ে পড়ে যায়। মাথায় আঘাত লেগে নার্ভের সমস্যা হয়। তার পর থেকে মাঝেমধ্যে চিৎকার করছিল, ভুল বকছিল। মঙ্গলবার পরিবারের লোকেরা তাকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে আনলে চিকিৎসকরা তাকে কলকাতায় রেফার করে। কিন্তু পরিবারের লোকজন কলকাতায় যাওয়ার বদলে গ্রামে ফিরে যায়। ছেলেটিকে মামুদপুরে অভিযুক্ত ওঝার কাছে নিয়ে যায়। অভিযোগ ওঝা বলেছিল, কিশোরকে ভূতে ধরেছে। ভূত তাড়াতে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
খবর পেয়ে যুক্তিবাদী মঞ্চের লোকজন নহাটা পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়। তারা কিশোরকে উদ্ধার করে। ওঝার দাবি, "ছেলেটা দোষ পেয়েছিল। ওকে ভূতে ধরেছিল তাই ওকে ঝাড়িয়ে ঠিক করছিলাম। আগেও অনেককে ভূতে ধরেছিল। আমি এভাবেই তাদের ঝাড়িয়ে ভূত তাড়িয়ে দিয়েছি।" যুক্তিবাদী মঞ্চের সম্পাদক প্রদীপ সরকার বলেন, "মামুদপুর গ্রামে এক ওঝার ভূত ছাড়ানোর নাম করে ১৫ বছরের এক বালকের উপর নির্মম অত্যাচার করছে। গায়ে গরম জল ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। ছেলেটির স্নায়ু রোগের সমস্যা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বনগাঁ হাসপাতাল থেকে ট্রান্সফার করলে বাড়িতে এনে স্থানীয় ডাক্তার দেখায়। তিনিও কলকাতা নিয়ে যেতে বলেছিলেন। তা না করে বাড়ির লোকজন বাচ্চাটির উপর অমানবিক অত্যাচার করতে দিল। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দিই।"