স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি পরিষেবা পাচ্ছেন? তা জানতে এবার সরাসরি সাধারণ মানুষের দুয়ারে যাবে প্রশাসন। একই সঙ্গে শুনবে নানা অভাব-অভিযোগ। সেই লক্ষ্যে এবার রাজ্য স্তর ও জেলায় জেলায় ‘সিটিজেন রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট ইউনিট’ নামে বিশেষ জনসংযোগ ইউনিট তৈরি হচ্ছে। মঙ্গলবার প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), এমনটাই নবান্ন সূত্রে খবর।
পঞ্চায়েতে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ হলে সরাসরি এফআইআর। প্রয়োজনে টাকা ফেরত। প্রশাসনকে স্বচ্ছ করতে সম্প্রতি এমনই নিদান দিয়েছিল নবান্ন। এবার আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে সরাসরি মানুষের দরজায় কড়া নাড়ার সিদ্ধান্ত। উদ্দেশ্য, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মানুষের কাছে কতটা পৌঁছচ্ছে তা খতিয়ে দেখা। এই বিশেষ জনসংযোগ ইউনিট সরাসরি জনতার সঙ্গে যোগাযোগ করে সরকারি প্রকল্প নিয়ে নাগরিকদের মনোভাব, চাহিদা, অভাব অভিযোগ শুনে নবান্নে রিপোর্ট পাঠাবে। নাগরিক পরিষেবা মসৃণতর করতে মুখ্যমন্ত্রী দুয়ারে সরকার, পাড়ায় সমাধানের মতো কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। সম্প্রতি দুয়ারে সরকার, দুয়ারে ত্রাণ দেশের সেরা প্রকল্পের পুরস্কার পেয়েছে। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, কৃষকবন্ধু, স্বাস্থ্যসাথীর মতো একাধিক প্রকল্প মানুষের দরজায় পৌঁছে যাচ্ছে দুয়ারে সরকারের হাত ধরে।
[আরও পড়ুন: বাংলায় বাড়ছে সুস্থতার হার, করোনা সংক্রমণে লাগাম টানতে জোরকদমে চলছে টিকাকরণ]
কিন্তু আদিবাসী ও তফসিলি জাতির মানুষের কাছে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা সঠিকভাবে পৌঁছচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বাধ্য হয়ে রাজ্যের পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক এলাকাগুলিতে ১৩ জুন থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি চালিয়েছে নবান্ন। অভিযোগের তালিকা যাতে আর দীর্ঘায়িত না হয় তার জন্য এবার সরকারিভাবে জনসংযোগের উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, একজন দক্ষ আইএএস অফিসারের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে এই প্রকল্প। কেন্দ্রীয়ভাবে তো বটেই, জেলা থেকে ব্লক স্তরে জনসংযোগ ইউনিট তৈরি করা হবে। নবান্নের এক আধিকারিকের দাবি, এর ফলে একদিকে যেমন প্রশাসনের কাজকে স্বচ্ছ ও মসৃণ করে তোলা যাবে, অন্যদিকে সরকারের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সংযোগ আরও মজবুত হবে। বোঝা যাবে মানুষের মন। প্রকল্প নিয়ে অভিযোগ জানানোর পর কাজের কাজ আদৌ হচ্ছে কি না, তাও জানার চেষ্টা হবে। সমাধান সূত্রও খুঁজবে এই ইউনিট। নবান্ন সূত্রে খবর, ইউনিট পরিচালনার বিস্তারিত শীঘ্রই গাইডলাইন আকারে জেলাগুলিকে জানাবে পঞ্চায়েত দফতর।
আগামী বছরের গোড়াতেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, সামাজিক প্রকল্পগুলির পরিচালনায় স্বচ্ছতা রাখতেই এই বিশেষ উদ্যোগ। সম্প্রতি রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তর ১০০ দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে কড়া মনোভাব নিয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে যাতে কোনও দুর্নীতি বা স্বজনপোষণ না থাকে তার জন্য এবার এই নয়া জনসংযোগ ইউনিট তৈরির পরিকল্পনা নবান্নের।