গুজরাট টাইটান্স: ২৩৩/৩ (গিল-১২৯, সুদর্শন-৪৩, মাধওয়াল-৫২/১)
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ১৭১/১০ (তিলক-৪৩, সূর্যকুমার-৬১, মোহিত-১০/৫)
৬২ রানে জয়ী গুজরাট টাইটান্স
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অনবদ্য, অসাধারণ, অবিশ্বাস্য, অপ্রতিরোধ্য। কোন শব্দে বাঁধা যাবে শুভমান গিলকে? তাঁর ইনিংস মানে চোখের আরাম। শুধু তো দর্শক নয়, গোটা ক্রিকেট কূলকে মুগ্ধ করছেন তিনি। তাঁর হাত ধরেই শক্ত হচ্ছে আগামীর ভিত। সানি, শচীন, কোহলিদের ট্র্যাডিশন সমানে বয়ে নিয়ে যাওয়ার লোকটিকে যেন খুঁজে পেয়েছে ভারত। একটি আইপিএল সিজনে তিনটে সেঞ্চুরি। শুভমানের ধারাবাহিকতাই বলে দিচ্ছে, তিনি ব্যাট হাতে বিপক্ষের বোলারের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলতে পছন্দ করেন। আর চুপচাপ, সংযত এই গিলের বিধ্বংসী, আগ্রাসী ব্যাটিং বিক্রমেই টানা দ্বিতীয়বার টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছে গেল গুজরাট টাইটান্স (Gujarat Titans)। তাও আবার রোহিত শর্মাদের মাটি ধরিয়ে!
গতবারের চ্যাম্পিয়ন নাকি পাঁচবারের আইপিএল জয়ীরা? এবার ধোনির চেন্নাইয়ের মুখোমুখি হবে কারা? এই আলোচনাতেই দিনভর সরগরম ছিল ভারচুয়াল ওয়াল। আর বৃষ্টিস্নাত নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে যখন টস জিতে গুজরাটকে ব্যাট করতে পাঠালেন রোহিত, তখন ঘরের মাঠের দর্শকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল বইকী! প্রথমে ফিল্ডিং করে স্লো আউটফিল্ডের সুবিধা তুলতে চেয়েছিল মুম্বই। কিন্তু গিল নামক সাইক্লোন সব পরিকল্পনা তছনছ করে দিল। যে আকাশ মাধওয়ালকে তুরুপের দাস হিসেবে ধরেছিল মুম্বই, তিনিও এদিন নিরাশ করলেন। আর তরুণ তুর্কির মহাকাব্যিক ইনিংসে তৈরি হল একগুচ্ছ রেকর্ড।
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানের ‘হাইব্রিড’ মডেলের দিকেই এগোচ্ছে এশিয়া কাপ, দ্বিতীয় ভেন্যু কোনটি?]
বিরাট কোহলির পর দ্বিতীয় ভারতীয় তারকা হিসেবে আইপিএলের এক মরশুমে ৮৫০ রানের গণ্ডি পেরলেন গিল। এই তালিকায় সব মিলিয়ে চতুর্থ স্থানে তিনি। পাশাপাশি দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে এক মরশুমে তিনটি শতরানের মালিকও হয়ে গেলেন তিনি। ২০১৬ আইপিএল মরশুমে চারটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন কোহলি। ৬০ বলে গিলের চোখ ধাঁধানো ১২৯ রানের পর গিলকে শুভেচ্ছা জানান কোহলি। তাঁর ছবি পোস্ট করে একটি তারার ইমোজি দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছেন গিল কত বড় স্টার হয়ে উঠেছেন। বলাবাহুল্য কমলা টুপিও তাঁরই দখলে।
এদিন নিজেদের সর্বকালীন সর্বোচ্চ এবং মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করে গুজরাট। ২৩৩ রান তাড়া করে জেতা যে কোনও দলের পক্ষেই কঠিন। তাও আত্মবিশ্বাসে ভর করেই লড়াই শুরু করে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। রোহিত (৮) ও নেহাল (৪) দ্রুত ফিরে গেলে খেলা জমিয়ে দেন ক্যামেরন গ্রিন ও সূর্যকুমার। একলাফে রান রেট বাড়িয়ে দলকে অনেকটা এগিয়ে দেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েই খেলার রাশ নিজেদের হাতে টেনে নেন হার্দিক পাণ্ডিয়ারা। ১০ রান দিয়ে একাই পাঁচটি উইকেট তুলে নেন চেন্নাইয়ের প্রাক্তনী মোহিত শর্মা। দুটি করে উইকেট পান শামি ও রশিদ খান।
গতবার রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে নিজেদের উদ্বোধনী মরশুমেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন হার্দিকরা। এবার তাঁদের সামনে ধোনির চেন্নাই। ফল যা-ই হোক, সুপার সানডে-তে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের দুরন্ত এক লড়াইয়ে যে সাক্ষী থাকতে চলেছে ক্রিকেটবিশ্ব, তা আন্দাজ করাই যায়।