দীপঙ্কর মণ্ডল: আচার্য বিল পাশ হয়ে গিয়েছে রাজ্য বিধানসভায়। আইনটি কার্যকর হওয়া রাজভবনের গেটে আটকে এখন। রাজ্যপালের স্বাক্ষরের অপেক্ষায়। এই টানাপোড়েনের মাঝে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য (VC)নিয়োগ করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। এবার তা নিয়ে টুইট করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। সংবিধানের একাধিক ধারা ও তার সংশোধনী উল্লেখ করে তাঁর বার্তা, নিয়ম অনুযায়ী ক্ষমতাবলে রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগ করতেই পারেন, কিন্তু তাঁরা দায়িত্ব নিতে পারবেন না।
রাজ্যপাল আচার্য বিলের সংশোধনীতে সই না করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিধানসভার স্পিকারও। শাসকদল তৃণমূলেরও অভিযোগ, রাজ্যপাল ইচ্ছাকৃতভাবে বিলগুলিতে সই করছেন না। যার জন্য আটকে রয়েছে সংশোধিত আইনের প্রয়োগ। সংশোধনী অনুযায়ী, স্বাস্থ্য, প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয়েরও আচার্য হবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু আপাতত কিছুই কার্যকর করা যাচ্ছে না। এবার তা নিয়ে স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রীই আসরে নামলেন। টুইটে তাঁর বক্তব্য, ২০১৯ সালের বিধি অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন রাজ্যপাল। বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১৯ সালের বিধি ও বিধান মেনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ করা হবে। তবে সংশোধনী আইন মেনে উপাচার্য নিয়োগ হলে এই ঘোষণা অনুযায়ী দায়িত্ব নিতে পারবেন না। তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘মুসলমান এখন ভাড়া পাওয়া যায়, সাজতে হয় না’, বিস্ফোরক মন্তব্য মহম্মদ সেলিমের]
উপাচার্যের এই নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তৃণমূলের মূল অভিযোগ ছিল, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করে তিনি একতরফাভাবে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন, যা সাংবিধানিক নিয়মের পরিপন্থী। শনিবার এর জবাবে ধনকড় দিনক্ষণ উল্লেখ করে নিজের কাজের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। দাবি করেছেন, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীই তাঁকে তথ্য দিয়েছিলেন। তা নিয়ে ব্রাত্য বসুর সংশ্লিষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং সংবিধানের ধারা উল্লেখ করেই প্রয়োজনীয় কর্তব্য মনে করিয়ে দিয়েছেন ধনকড়কে।
[আরও পড়ুন: বিনা যুদ্ধে হার মানা নয়, স্পিকার নির্বাচনে শিণ্ডেদের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিল উদ্ধব সেনা]
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও (Kunal Ghosh) তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তাঁর দাবি, রাজ্যপাল যে আচার্য বিল নিয়ে তৃণমূলের সমালোচনা করেছেন, তা নিন্দনীয়। কুণালবাবু জানিয়েছেন, নিজের বক্তব্যে তিনি অনড়। যে বিলটি পাশ করা হয়েছে, তা বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে। তারপর যদি রাজ্যপাল ক্ষমতা দেখিয়ে কোনও পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন, তা পাশ হওয়া বিলের পরিপন্থী। তাঁর উচিত নির্বাচিত বিধায়কদের সমর্থনে পাশ হওয়া বিলটিকে সম্মান দেওয়া। পাশাপাশি এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের যৌথ সাংবাদিক বৈঠকের দাবিও তুলেছেন কুণাল ঘোষ।