চঞ্চল প্রধান,হলদিয়া: কার্গো বাড়াতে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তি করল হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ। বুধবার হলদিয়া টাউনশিপে বন্দরের প্রশাসনিক ভবন জওহর টাওয়ারে আদানি গোষ্ঠীর হলদিয়া ডক কমপ্লেক্স বাল্ক টার্মিনাল লিমিটেডের বিজনেস হেড প্রশান্ত পাত্র এবং হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান অমল কুমার মেহেরা এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বন্দরের ২ নম্বর বার্থে পন্য ওঠা-নামানোর কাজে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলে (পিপিপি মডেল) ৩০ বছরের জন্য এই চুক্তি হয়েছে।
সারা বছর দেশের বিভিন্ন বন্দরে ৩৫০ মিলিয়ন মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করার সুবাদে আদানি গোষ্ঠীর সুনাম রয়েছে। সেই আদানি গোষ্ঠী এবার পণ্য পরিবহণের জন্য হলদিয়া বন্দরকে বেছে নিয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের সঙ্গে বন্দরের প্রাথমিক চুক্তি হয়। তারপর চূড়ান্ত চুক্তির জন্য নথিপত্র তৈরির পাশাপাশি ব্যাংকগুলির সহযোগিতা পেতেও সময় লেগে যায়। বুধবার চূড়ান্ত হল সেই বাণিজ্যিক চুক্তি। চুক্তি স্বাক্ষরে সময় হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার(এম অ্যাণ্ড এস) প্রবীণ কুমার দাস, জিএম (ট্রাফিক) অভয় কুমার মহাপাত্র, জিএম( ইঞ্জিনিয়ারিং) এ গণেশন। অন্যদিকে আদানি গোষ্ঠীর তরফে বিজনেস হেডের পাশাপাশি গোষ্ঠীর শীর্ষকর্তা মানস পান,রাহুল আগরওয়াল,শিব শংকরও উপস্থিত ছিলেন। চুক্তির ফলে বন্দরের ২ নম্বর বার্থে ২ লক্ষ ১১ হাজার বর্গমিটার জায়গা এখন আদানিদের হাতে। সামনে ১ জুলাই থেকে তারা এই বার্থ আধুনিকীকরণের কাজ শুরু করতে চলেছে। সেই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু প্রযুক্তিগত পরিবর্তন ঘটবে এই বার্থে। শিপ-আনলোড, কনভেয়ার, রিস্ট্যাগ, ফের কনভেয়ার, ওয়াগন লোডিং সিস্টেমের আধুনিকীকরণ করা হবে।
[আরও পড়ুন: আঘাত লাগার পর কেটেছে ২৪ ঘণ্টা, কেমন আছেন মুখ্যমন্ত্রী?]
বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান অমল কুমার মেহেরা জানান,”ল্যান্ডলর্ড মডেলে দেশের সমস্ত বন্দরে পিপিপি মডেলে বার্থগুলি চলতে শুরু করেছে । ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের বন্দরগুলিতে সেই কাজ সম্পূর্ণ করার টার্গেট রয়েছে। সেই নিরিখে হলদিয়া বন্দরের ২ নম্বর বার্থে পণ্য পরিবহণে উন্নত পরিকাঠামো গড়তে চলেছে আদানি গোষ্ঠী । আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দ্রুত মাল ওঠানামা করা সুবিধা থাকছে। যারা এই বন্দরের খদ্দের তারা আরও উন্নত পরিষেবা পাবেন। সেই সঙ্গে ওই বার্থে হলদিয়া বন্দরের পরিবহণের পরিমাণও বাড়বে। লাভবান হবে হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ ।”
জানা গিয়েছে, বন্দরের ২ নম্বর বার্থে বছরে ৩.৭ মিলিয়ন মেট্রিকটন পণ্য পরিবাহিত হত। আদানিদের হাত ধরে তা বেড়ে ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন হবে। আশাবাদী বন্দর কর্তৃপক্ষ। আদানি গোষ্ঠীর হলদিয়া বন্দরের বিজনেস হেড প্রশান্ত পাত্র জানান,,”হলদিয়া বন্দরে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমরা খুশি। এখানে ২ নম্বর বার্থে ৪০০ কোটি টাকা খরচ করে আধুনিকীকরণ করা হবে। আগামী ৩০ মাসের মধ্যে সেই কাজ সম্পূর্ণ করব। বাকি সাড়ে সাতাশ বছর ধরে মাল ওঠানামার কাজ করার সময় থাকছে। মোট ৩০ বছরের চুক্তি হয়েছে হলদিয়া বন্দরের সঙ্গে।” এতদিন লিকুইড কার্গো এই বার্থে ওঠা-নামা করেছে । সেই জায়গায় বাল্ক কার্গো ওঠা-নামা করবে। কয়লা তার মধ্যে অন্যতম বলে জানিয়েছেন আদানি কর্তাগন। রাজ্যের তাজপুর বন্দর সম্পর্কেও এদিন আশার আলো দেখিয়েছেন আদানিকর্তা প্রশান্ত পাত্র। তিনি বলেন,”তাজপুরে আমরা আশাবাদী। কাজ হবে।”