সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতকে ‘গরিব’ বলে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ফর্মুলা ওয়ান তারকা লুইস হ্যামিল্টনকে। কিন্তু তিনি যে কারও নিন্দা করতে এমন মন্তব্য করেননি, এবার সেই ব্যাখ্যাই দিলেন পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।
২০১১ সালে প্রথমবার ফর্মুলা ওয়ান গ্রাঁ প্রি-র আসর বসেছিল গ্রেটার নয়ডার ট্র্যাকে। বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে সেখানে রেসিং ট্র্যাক তৈরি করা হয়। গোটা বিশ্বের এফ ওয়ান তারকারা অংশ নিয়েছিলেন সেখানে। যে প্রতিযোগিতায় চেকার্স ফ্ল্যাগ হাতে ছিলেন স্বয়ং মাস্টার ব্লাস্টার শচীন তেণ্ডুলকর। পরের দু’বছর সেই ট্র্যাকে রেস দেখতে হাজির হয়েছিলেন দর্শকরা। কিন্তু তারপর থেকে আর কোনও প্রতিযোগিতা হয়নি ঝাঁ-চকচকে সেই ট্র্যাকে। মোটা অঙ্কের অর্থে তৈরি ট্র্যাক যেন ভূতের মতোই পড়ে রয়েছে। দিন কয়েক আগে গ্রেটার নয়ডার সেই রেসিং ট্র্যাকের কথাই উঠে আসে হ্যামিল্টনের মুখে। একটি ইংরাজি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “একটি রেসে নামার আগে ভারতে গিয়েছিলাম। ভীষণ অদ্ভুত লাগল দেখে যে ভারতের মতো গরিব দেশে গ্রাঁ প্রি-র জন্য রেসিং ট্র্যাক বানানো হয়েছে।” তারপরই তাঁর এই মন্তব্য নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড় ওঠে। অনেকেই বলেন, এমন মন্তব্য করে ভারতীয়দের ‘অপমান’ করেছেন তারকা ড্রাইভার। বৃহস্পতিবার নেটিজেনদের কাছে নিজেকে স্পষ্ট করলেন তিনি। জানান, ভারতবাসীর খারাপ লাগে, এমন কোনও কথা তিনি বলতে চাননি।
[অপ্রতিরোধ্য হরমনপ্রিতরা, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ চারে ভারত]
টুইটারে একটি পোস্টে নিজের মন্তব্যের সাফাই দিয়ে মার্সেডিজ দলের ড্রাইভার বলেন, “প্রথমেই বলতে চাই, বিশ্বের অন্যতম সুন্দর একটি দেশ ভারত। সেখানকার সংস্কৃতি অসাধারণ। আমি সেখানে ভাল সময়ও কাটিয়েছি। তবে অর্থনীতির দিক থেকে ভারত যেমন সবচেয়ে দ্রুত উন্নতি করছে তেমনই এখানে দারিদ্রও চোখে পড়ার মতো। আমি শুধু এটুকুই বলতে চেয়েছি, দুপাশে ঘরছাড়া মানুষগুলির মধ্যে দিয়ে যখন রেসিং ট্র্যাক ধরে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছিল। একদিকে সুন্দর-সাজানো ট্র্যাক আর অন্যদিকে গরিব মুখগুলো। বড্ড সামঞ্জস্যের অভাব। এত টাকা খরচ করে ট্র্যাক বানানোর পরেও তার কোনও ব্যবহার নেই। অথচ সেই অর্থ দিয়ে গরিবদের জন্য বাড়ি-ঘর, স্কুল তৈরি করাই যেত। গ্রাঁ প্রি-র সময় তেমন ভিড়ও লক্ষ্য করিনি। হয়তো আগ্রহ কম ছিল কিংবা খরচ বেশি ভেবে তেমন ভিড় জমাননি মানুষ। তবে তার মধ্যেই বেশ কিছু ভারতীয় ফ্যানদের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছিল।”
হ্যামিল্টনের মন্তব্যের এমন ভুল ব্যাখ্যায় হতভম্ব মার্সেডিজ কর্তা টোটো উলফও। তিনি বলেন, ভারতের প্রতি সহানুভূতিই দেখিয়েছেন লুইস। দেশের দারিদ্র নিয়ে সমালোচনা করেননি। কিন্তু মানুষ অদ্ভুতভাবে এর অন্যরকম ব্যাখ্যা খুঁজে বের করেছে। তবে মন্তব্যের ব্যাখ্যার পর অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্রিটিশ ড্রাইভারের প্রশংসাই করছেন।
The post ভারত ‘গরিব দেশ’ মন্তব্যে বিতর্কের ঝড়, কী সাফাই দিলেন হ্যামিল্টন? appeared first on Sangbad Pratidin.