রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছিল ব্যাংক জালিয়াতির। সেই সঙ্গে নাকি জুটেছিল ভুয়ো শিক্ষকের তকমাও। যার পরিণতি হল মর্মান্তিক। এই নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝেই উদ্ধার শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট (Kolaghat) থানার দেড়িয়াচক গ্রামে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, আত্মঘাতী হয়েছেন ওই শিক্ষক।
জানা গিয়েছে, মৃতের নাম বাপ্পা বর্মণ। তাঁর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানার দেড়িয়াচক গ্রামে। মৃতের পরিবারের দাবি, গত কয়েকদিন ধরেই এলাকার একাধিক ব্যক্তির ফোনে বাপ্পার নামে ব্যাংক জালিয়াতির একটি মেসেজ ঘোরাফেরা করছিল। তা নিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই শিক্ষক। মঙ্গলবার সকালে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার হয় বাপ্পার ঝুলন্ত দেহ। গোটা ঘটনায় রীতিমতো হতবাক গোটা পরিবার।
[আরও পড়ুন: রাতের বিটি রোডে দুই বাসের লড়াই থেকে ধুন্ধুমার, এক চালকের মারে মাথা ফাটল মালিকের]
বাপ্পার স্ত্রী মৌসুমী জানান, “আমার স্বামীর নামে একটি ব্যাংক জালিয়াতি সংক্রান্ত মেসেজ ঘোরাফেরা করছিল। একটি অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে এই ম্যাসেজটি ছড়ানো হয়েছে। এই নিয়ে গতকাল বাড়িতে আলোচনাও হয়েছিল। সেখানে বাপ্পা এমন কোনও ব্যাংক ঋণের বিষয়ে জানে না বলেছিল। কেন এমন করল জানি না।” যদিও ঘটনার নেপথ্যে উঠে এসেছে আরও একটি তত্ত্ব। শোনা যাচ্ছে, মৃত বাপ্পা মণ্ডলকে ভুয়ো শিক্ষক বলে অপবাদও দেওয়া হয়েছিল। ফলে সর্বদা চাকরি চলে যাওয়ার আতঙ্কে ভুগছিলেন তিনি।
সূত্রের খবর, কাঁথির ভবানীপুর চক অঘোর হাই স্কুলে শিক্ষকতা করতেন বাপ্পা। সোমবার তিনি স্কুলেও গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে জানিয়েছিলেন বুধবার তিনি পুনরায় স্কুলে যাবেন। এলাকায় শান্তশিষ্ট হিসেবে পরিচিত বাপ্পার কারও সঙ্গে কোনও শত্রুতা ছিল না। বাপ্পা’র স্ত্রীর দাবী, “আমার স্বামীর ফোনটি দু’দিন ধরে অস্বাভাবিক ভাবে চলছে। এটা কেউ হ্যাক করে ফেলতেও পারে। কিন্তু তাঁর আত্মহত্যার পেছনে কি রহস্য তা আমাদের জানা নেই।”
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের অস্ত্র পাচার রাজ্যে, এসটিএফের হাতে গ্রেপ্তার কুখ্যাত ব্যবসায়ী]
এ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক বলেন, বিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে বিষয়টা দেখছি। তবে স্কুল সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে, এমনটা নয় বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।