শেখর চন্দ্র, আসানসোল: বদলির নির্দেশ এসেছিল আগেই। তবে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পর রাতারাতি সাসপেন্ড করা হল আসানসোলের বারাবনি থানার ওসি মনোরঞ্জন মণ্ডলকে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে এই সাসপেন্ড। তবে বালি, কয়লাপাচার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ কর্মীদের একহাত নেওয়ার পর এই সাসপেনশন একাধিক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
আগেই মনোরঞ্জন মণ্ডল-সহ অন্যান্য কয়েকটি থানার ওসির বদলির নির্দেশ এসেছিল। শোনা যাচ্ছিল, অন্ডাল থানার দায়িত্ব পেতে পারেন মনোরঞ্জনবাবু। এরই মাঝে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়লা, বালি পাচার নিয়ে সরব হন। নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের নিশানা করেন। কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেন। এই পরিস্থিতিতে আচমকা এদিন রাতেই মনোরঞ্জন মণ্ডলকে সাসপেন্ড করেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরী। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, অপেশাদারিত্ব। যদিও কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই অভিযোগ তা স্পষ্ট করা হয়নি।
উল্লেখ্য, কয়লা-বালি পাচারের ঘটনায় তৃণমূল নেতাদের নাম জড়িয়েছে বারবার। অভিযোগ উঠেছে, এলাকার তৃণমূল নেতাদের মদতেই সক্রিয় পাচারকারীরা। শাসকদল বার বার সেসব অভিযোগ খারিজ করে পালটা যুক্তি দিয়েছে, কয়লাখনির নিরাপত্তার দায়িত্ব রাজ্যের নয়, তা কেন্দ্রের সিআইএসএফের। ফলে সেখানে অবৈধ কারবারের দায় কখনও রাজ্য নেবে না, কেন্দ্রকেই দায় নিতে হবে। রাতের অন্ধকারে যদি কয়লা বা বালি পাচার হয়, তাতে সিআইএসএফেরই হাত থাকে। এদিন ফের সিআইএসএফ-কেই দুষলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে নিশানা করেন পুলিশকর্মীদের একাংশকে। অভিযোগ তোলেন, ওই সিআইএফএফের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের কেউ কেউ দুষ্কর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের কয়েকঘণ্টার মধ্যে এই সাসপেন্ডের ঘটনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল।