স্টাফ রিপোর্টার: সোমবার অন্ধ্রপ্রদেশ ক্রিকেট রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটল। ১৬ টেস্ট খেলা ব্যাটার হনুমা বিহারী অন্ধ্র ক্রিকেট সংস্থাকে সাফ বলে দিলেন, আর জীবনে অন্ধ্রপ্রদেশের হয়ে খেলবেন না তিনি। কারণ, অন্ধ্রের হয়ে খেলতে গিয়ে তাঁর আত্মসম্মান বলে আর কিছু অবশিষ্ট নেই!
ঘটনাটা ঠিক কী? মধ্যপ্রদেশের কাছে চার রানে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে সোমবার রনজি ট্রফি অভিযান শেষ হয় অন্ধ্রর। খেলা শেষ হতেই বিস্ফোরক হনুমা। আসলে চলতি রনজি মরশুমের শুরুতে তাঁকে অধিনায়ক বাছা হয়েছিল। বাংলার বিরুদ্ধে রনজি গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে তিনি নেতৃত্বও দেন। কিন্তু হঠাৎই দ্বিতীয় ম্যাচে হনুমা খেলেন সাধারণ প্লেয়ার হিসেবে। ক্যাপ্টেন রিকি ভুঁই। শোনা যাচ্ছিল যে, বাংলার বিরুদ্ধে ম্যাচ চলাকালীন স্কোয়াডে থাকা এক ক্রিকেটারের উপর নাকি গলা চড়িয়েছিলেন হনুমা। যে ক্রিকেটারের বাবা আবার প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা। হনুমার বিরুদ্ধে সেই ক্রিকেটার নাকি নালিশ করেন বাবার কাছে। যার পর সেই নেতা সোজা ফোন করেন অন্ধ্রপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্তাদের। হনুমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। যার পর অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় হনুমাকে। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটল এদিন।
[আরও পড়ুন: জ্ঞানবাপীতে কীসের ভিত্তিতে পুজোয় অনুমতি আদালতের? জেনে নিন ‘ব্যাস কি তহখানা’র ইতিহাস!]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হনুমা লিখে দেন, “সবচেয়ে দুঃখের হল, সংস্থা মনে করে ওরা যা বলবে, প্লেয়ার মানতে বাধ্য। কারণ, প্লেয়াররা বেঁচেবর্তে রয়েছে ওদের জন্য। তাই ঠিক করেছি, আর কখনও অন্ধ্রপ্রদেশের হয়ে খেলব না। কারণ, আমার আত্মসম্মান নষ্ট হয়েছে এখানে। আমি আমার টিমকে ভালোবাসি। প্রতি মরশুমে যে ভাবে আমরা উন্নতি করছিলাম, দেখে দারুণ লাগত। কিন্তু আমাদের ক্রিকেট সংস্থা চায় না আমাদের রাজ্যের ক্রিকেটের উন্নতি হোক।’ এর পর যোগ করেন, ‘বাংলার বিরুদ্ধে আমি প্রথম ম্যাচে অধিনায়ক ছিলাম। সেই ম্যাচে দলের সতেরো নম্বর প্লেয়ারের উদ্দেশে চেঁচিয়ে ফেলি। সে গিয়ে তার বাবাকে বলে। তার বাবা আমাদের রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা কর্তাদের বলল, আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। গত বারের রনজি ট্রফি ফাইনালিস্ট বাংলার দেওয়া স্কোর আমরা তাড়া করে দিলাম। কিন্তু তার পরেও আমাকে নেতৃত্ব ছাড়তে বলা হল। অথচ আমার কোনও দোষ ছিল না। আমি ব্যক্তিগত ভাবে সেই প্লেয়ারকে আক্রমণ করিনি।’
হনুমার বিস্ফোরণের পরই তাঁর বর্ণিত সেই ‘প্লেয়ার’ অর্থাৎ কেএন প্রুধবি রাজ পালটা দেন। লেখেন, ‘আমিই সেই ক্রিকেটার, যাকে আপনারা সবাই কমেন্ট বক্সে খুঁজছেন। আপনারা যা যা শুনলেন, পুরোটাই মিথ্যে। আমার কাছে আত্মসম্মান অনেক বড়। নোংরা ভাষায় ব্যক্তিগত আক্রমণ কোনও ভাবে মেনে নেওয়া যায় না। টিমের সবাই জানে সে দিন কী হয়েছিল। মহামান্য ওই ক্রিকেটার আমাকে সে দিন বলেছিল, তোর জায়গা এটাই। এর চেয়ে বেশি তোর কিছু হবে না! সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা অন্যত্র গিয়ে করা ভাল!’ ফের এর জবাব দেন হনুমা। নিজের বিবৃতির একটা ছবি পোস্ট করেন। যার তলায় গোটা টিমের ক্রিকেটারদের সই করা। সঙ্গে লিখে দেন, ‘কী ঘটেছে সেদিন, পুরো টিম জানে।’ সবমিলিয়ে সরগরম অন্ধ্র ক্রিকেট।