সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রবিবারের মহারণের নায়ক কে? কোনও সন্দেহ নেই উত্তরটা বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। কিন্তু তিনি, হার্দিক পাণ্ডিয়াও (Hardik Pandya) ব্যাটে বলে যে পারফরম্যান্সটা করে গেলেন মেলবোর্নে, সেটাকে অস্বীকার করবে কে? প্রথমে বল হাতে তিন উইকেট, তারপর ৩১ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে ধুঁকতে থাকা পরিস্থিতিতে কোহলির সঙ্গে শতরানের পার্টনারশিপ- দিনটা যে হার্দিকেরও। আর তাই ম্যাচশেষে আবেগে চোখে জলও এল তার। প্রয়াত বাবার কথা বলতে গিয়ে। যা এমন মহানাটকীয় দিনের আরেক এক হিরের টুকরো মুহূর্ত হয়ে থাকল।
আসলে ছেলে হার্দিকের মধ্যে যে ক্রিকেটার হিসেবে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে খুব অল্প বয়সেই তা টের পেয়ে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা হিমাংশু পাণ্ডিয়া। পাশাপাশি বড় ছেলে ক্রুনাল পাণ্ডিয়ার ক্রিকেট-প্রতিভা নিয়েও নিঃসংশয় ছিলেন তিনি। এরপরই সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সুরাটের ছোট্ট গ্রাম থেকে বাস উঠিয়ে সপরিবারে ভদোদরায় চলে আসেন তিনি। সেই সঙ্গে বন্ধ করে দেন সুরাটের ছোট ব্যবসাটিও। এই স্বার্থত্যাগ যে আজও কাঁদায় হার্দিককে তা ফের জানা গেল রবিবার।
[আরও পড়ুন: রুদ্ধশ্বাস শেষ ওভার থেকে বিরাটকে কোলে তুলে রোহিতের নাচ, ভারত-পাক ম্যাচের সেরা ৫ মুহূর্ত]
এদিন সেই কথা বলতে গিয়ে চোখের জল সামলাতে পারছিলেন না হার্দিক। বললেন, ”এভাবে ছেলেদের জন্য নিজের বসবাস, ব্যবসা সব ছেড়ে চলে আসা এটা ভাবা যায় না। আমিও আজ সন্তানের বাবা, কিন্তু… এই আত্মত্যাগ… ভাবা যায় না!”
প্রসঙ্গত, ব্যাটে বলে কার্যত সব্যসাচী হয়ে উঠেছিলেন পাণ্ডিয়া। এদিন শুরুর ধাক্কা সামলিয়েও তড়তড়িয়ে এগোচ্ছিল পাক ইনিংস। এই সময়ই এক ওভারে হার্দিক ফিরিয়ে দেন শাদাব খান ও হায়দার আলিকে। এই ধাক্কা সামলে পাকিস্তানের পক্ষে আর বড় স্কোর করা সম্ভব ছিল না। পরের ওভারেও তিনি পান মহম্মদ নওয়াজের উইকেট। নিঃসন্দেহে পাক ব্যাটিং লাইন আপের মেরুদণ্ডই যেন ভেঙে যায় এর ফলে। সব মিলিয়ে ৩০ রান দিয়ে ৩ উইকেট পান তিনি।
এরপর ব্যাট হাতেও বিপর্যয় রুখে দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বিরাট কোহলির সঙ্গে ১১৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ভারতকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন তারকা অলরাউন্ডারই। যদিও ব্যাটিংয়ে সেই চেনা ছন্দে ছিলেন না তিনি। কিছুটা স্বভাববিরুদ্ধ ধীরগতির ইনিংসই খেলেন। তবুও তাঁর ৩৭ বলে ৪০ রানের ইনিংসটি না হলে যে কোহলি ম্যাজিকেও জয় অধরা থেকে যেতে পারত, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। আর তাই খেলার শেষে কোহলি, অর্শদীপদের পাশাপাশি পাণ্ডিয়ার বিক্রমের কথাও ঘুরছে সকলের মুখে মুখে। এমন সুখের দিনে তাঁর সাফল্যের কারিগরের কথা ভাবতে বসে তাই চোখ ভিজে গেল পাণ্ডিয়ার।