নিরুফা খাতুন: মহিলাদের হস্টেলে যৌন হেনস্তা! হরিদেবপুরের(Haridevpur) একটি হস্টেল থেকে এই অভিযোগ পেয়ে কার্যত থ হয়ে গিয়েছিল পুলিশ। এখানকার আবাসিক থেকে কর্মী - সকলেই তো মহিলা। তাহলে যৌন হেনস্তার অভিযোগ কার বিরুদ্ধে? তদন্তে নামতেই গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হয়। চার ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তরা করা হয় হস্টেল ওয়ার্ডেন ও তাঁর স্বামীকে। জানা যায়, মাস কয়েক আগে বিয়ে করে ওয়ার্ডেন স্বামীকে নিয়ে হস্টেলেই থাকছিলেন। কিন্তু হস্টেল কর্তৃপক্ষ সেকথা জানত না। আর এই সুযোগে একে একে তাঁর স্বামী চার ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। ছাত্রীরা প্রথমে নিজেদের অভিভাবকদের একথা জানিয়েছিলেন। রবিবার অভিভাবকরা একজোট হয়ে হরিদেবপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে দুজনকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
হরিদেবপুরের এম জি রোড এলাকায় রয়েছে UCNI নামে মহিলাদের একটি হস্টেল। সেখানে মোট ২৭ জন আবাসিক থাকে। রয়েছে বেশ কয়েকজন নাবালিকাও। রবিবার যখন অভিভাবকরা মেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন, তখন পাঁচ নাবালিকা মায়েদের জানায় যৌন হেনস্তার কথা। বলা হয়, আগস্ট থেকে তাদের সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এক ছাত্রীর বাবা সব শুনে দ্রুত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানান। তিনি আবার সেন্ট পলস চার্চের পাদরি। কর্তৃপক্ষকে জানানোর পাশাপাশি তিনি নিজে হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে তড়িঘড়ি তদন্তে নামে পুলিশ।
জানা যায় হস্টেল ওয়ার্ডেন সুপ্রিয়া সিংয়ের স্বামী সুপ্রভাত দলুইয়ের কুকীর্তির কথা। হস্টেল কর্তৃপক্ষকে লুকিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে এসে বসবাস এবং সেই সুযোগে নাবালিকাদের যৌন হেনস্তার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্বামীকে এভাবে আশ্রয় দেওয়ার জন্য গ্রেপ্তার হন ওয়ার্ডেন সুপ্রিয়াও। পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও জানতে পারে, এসব ঘটনায় জড়িত আরও দুই শিক্ষক বিশ্বনাথ শীল ও শোভন মণ্ডলও। তারাও সুযোগমতো ছাত্রীদের যৌন হেনস্তা করত। তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এসব ঘটনার খবর পৌঁছয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের কাছে। দ্রুত কমিশনের সদস্যরা পদক্ষেপ নেন। নাবালিকাদের রীতিমতো পুলিশি প্রহরায় বাড়ি পাঠানো হয়। ধৃতদের জেরা চলছে। আজ তাদের আদালতে পেশ করা হবে বলে খবর। এই ঘটনায় আতঙ্কিত ছাত্রীরা। অভিভাবকদের চিন্তা, এর পর আর কীভাবে নিশ্চিন্তে মেয়েদের হস্টেলে রাখবেন?