স্টাফ রিপোর্টার: বাইরে পিনপতনের নৈঃশব্দ। কিন্তু আপনি ভোঁ-ভোঁ, শোঁ-শোঁ এমনকী ড্রাম বাজানো কিংবা বাঁশি অথবা রিংয়ের আওয়াজ পাচ্ছেন? এবং সেই আওয়াজ কিন্তু অন্য কেউ শুনতে পাচ্ছে না? একদিন দুদিন এমন চললেই দেরি না করে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়াই মঙ্গল। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে?
ইএনটি বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই রোগের নাম টিনিটাস। যা সচরাচর দেখা যায় না। কিন্তু মারাত্মক গরমে এমন রোগী মিলছে। দুপুরে শুকনো আর দিনভরের আর্দ্র গরম, সঙ্গে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পারদের ঘোরাফেরার সঙ্গে একেবারেই অভ্যস্ত নয় কলকাতা ও শহরতলির মানুষ। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই মারাত্মক গরমে সকলের স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে আচমকা যে কষ্টদায়ক পরিবর্তন এসেছে, তার জেরেই নতুন করে টিনিটাসের রোগী দেখা যাচ্ছে সরকারি হাসপাতালে।
[আরও পড়ুন: বসিরহাটে স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত শিশু! বিপদ মুক্তির উপায় জানালেন চিকিৎসক]
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডা. দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘বেশ কিছু রোগী আসছেন, যাঁদের গরমে হঠাৎ প্রবল জলশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন থেকে টিনিটাস হয়েছে।’’চিকিৎসকরা বলছেন, কানের মধ্যে সারাক্ষণ বাতাসের শোঁ-শোঁ শব্দ, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক কিংবা বাঁশির শব্দের মতো অস্বাভাবিক আওয়াজ শোনার সমস্যাকেই টিনিটাস বলে। পিজি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডা.সিদ্ধার্থ বসুর কথায়, ‘‘টিনিটাস এক কানে বা দুকানে হতে পারে। এক কানে হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাঁ কানে হয়। কেউ একটানা শব্দ শোনেন তো কেউ আবার কিছুক্ষণ পর পর শোনেন। দিনের বেলা তেমন বোঝা না গেলেও রাতের বেলা যখন চারদিক নিস্তব্ধ হয়ে যায়, তখনই এই অস্বাভাবিক শব্দ কানে বেশি করে বাজে আর রাতের ঘুমের বারোটা বেজে যায়। আর ঘুম না হলে পরের দিন সব কাজ দফারফা।’’
টিনিটাসের জেরে ঘুমের যেমন বারোটা বাজে, তেমনই আবার উলটোটাও হয়। আর নাক-কান-গলার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বৈপায়ন মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, এই ভয়াবহ গরমে বেশিরভাগ মানুষই এসি-র সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাঁদের দিনের পর দিন টানা ঘুম হচ্ছে না রাতে। সেই অ্যাকিউট ঘুমের ঘাটতিও টিনিটাস ডেকে আনছে। তিনি বলেন, ‘‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বয়সজনিত নার্ভ বধিরতা টিনিটাসের মূল কারণ।’’ফলে সকলেই পরামর্শ দিচ্ছেন, এরকম হলেই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে।