সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডায়াবেটিসকে বলা হয় 'সাইলেন্ট কিলার'। ডায়াবেটিসে প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন অসুবিধা না হলেও, ভিতরে ভিতরে চূড়ান্ত ক্ষতির পথ কিন্তু তৈরি হয়ে যায় আগেই। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে অজান্তেই শরীরের একাধিক রোগ তৈরি হয়ে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রথমে তা বোঝা যায় না। শুধু হৃদযন্ত্র বা কিডনি নয়, ডায়াবেটিস চোখেরও ক্ষতি করে। প্রথমে হয়তো তেমন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। কিন্তু পরে চোখের দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হতে থাকে। এই ভয়ংকর পরিণতিকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে 'ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি'।
দীর্ঘ দিন ধরে শরীরে ডায়াবেটিস বাসা বেঁধেছে? তাহলেই আগেভাগে সাবধান হোন। দীর্ঘ সময় ধরে ডায়াবেটিসের ফলে চোখে রেটিনার ক্ষুদ্র রক্তনালীগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। রক্তনালীগুলি ক্রমশ দুর্বল হতে শুরু করলে এগুলি থেকে রক্ত নিঃসৃত হতে থাকে। একে বলে নন-প্রলিফারেটিভ ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথ। দুর্বল হতে হতে একসময় এই নালীগুলি ছিঁড়ে যাওয়ার উপক্রম হলে দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। এর হাত থেকে বাঁচার উপায় কিন্তু আপনার হাতেই রয়েছে।
কী করবেন?
(১) নিয়মিত ব্লাড সুগার পরীক্ষা করুন। HbA1c মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলে রেটিনোপ্যাথির ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রিত থাকলে আর ভয় থাকে না।
(২) উচ্চ রক্তচাপ এবং অস্বাভাবিক কোলেস্টেরল রেটিনোপ্যাথির ঝুঁকি বাড়ায়। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ডাক্তারের পরামর্শমতো চলুন।
(৩) ডায়াবেটিস ধরা পড়ার পর থেকেই বছরে অন্তত একবার চোখের সম্পূর্ণ পরীক্ষা করান। দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে কোনও ভয় থাকে না।
(৪) নিয়মিত শরীরচর্চা, সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং ধূমপান সম্পূর্ণভাবে ত্যাগ করুন। ধূমপান রেটিনোপ্যাথি সহ ডায়াবেটিসের অন্যান্য জটিলতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই ধূমপান থেকে দূরে থাকুন।
(৫) দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া, আলোর ঝলকানি দেখা বা চোখের সামনে ভাসমান কালো দাগ দেখলে অবিলম্বে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। দ্রুত পদক্ষেপ দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঝুঁকি কমায়।
(৬) সবুজ শাকসবজি বেশি করে খান। সঙ্গে মরশুমি ফল, মাছ, মাংস স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এর সঙ্গে প্রতিদিন সকাল ও বিকালে ৩০ মিনিট করে হাঁটার অভ্যাস করুন।
(৭) প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে লেজার বা ইনজেকশনের মাধ্যমে সহজেই এর চিকিৎসা সম্ভব।
