সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মলদ্বারে ব্যথা! রক্তপাত? পাইলস বা অর্শ হতে পারে। বেশির ভাগ মানুষ এমনটাই মনে করেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, কোলন ক্যানসার ও অর্শের লক্ষণগুলো অনেকটা একই ধরনের? আর তাই রোগের প্রাথমিক স্তরে অর্শ ভেবে ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। সামান্য অবহেলাতেও ঘটে যেতে পারে মারাত্মক বিপদ। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এমন কিছু সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে যা আমাদের জেনে রাখা একান্ত জরুরি। তাহলে রোগের গতিপ্রকৃতি আগেভাগে কিছুটা ঠাহর করা সম্ভব হয়।
অর্শ বা পাইলসের লক্ষণ
অর্শ হলে সাধারণত মলত্যাগের সময় উজ্জ্বল লাল রঙের টাটকা রক্ত বের হয়। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় 'হেমাটোকেজিয়া' বলা হয়। মলদ্বারে চুলকানি বা ফোলাভাব অনুভব হতে পারে। অনেক সময় মলত্যাগের পর ব্যথা হতে থাকে। এটি মূলত মলদ্বারের শিরার ওপর চাপের ফলে ঘটে। এটি বিপজ্জনক হলেও প্রাণঘাতী নয়।
কোলন ক্যানসারের লক্ষণ
কোলন ক্যানসারের ক্ষেত্রে রক্তের রং কিছুটা কালচে হতে পারে। এখানে রক্তের সঙ্গে মলের মিশ্রণ থাকে। সবচেয়ে বড় লক্ষণ হল 'Bowel Habit Change' বা মলত্যাগের অভ্যাসে আমূল পরিবর্তন। কখনও দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য, আবার কখনও আচমকা ডায়রিয়া। এছাড়া ওজন কমে যাওয়া এবং রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া এর অন্যতম উপসর্গ।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
টেনেস মাস: মলত্যাগের পরেও যদি মনে হয় পেট পরিষ্কার হয়নি বা আবার মলত্যাগের বেগ আসছে, তবে সাবধান হোন।
মলের গঠন: টিউমার যদি মলদ্বারের পথকে সরু করে দেয়, তবে মলের আকার অনেকটা সরু ফিতের মতো হয়ে যায়।
পেটে পিণ্ড: অনেক সময় তলপেটে হাত দিলে শক্ত কোনও চাকা বা পিণ্ড অনুভূত হয়।
কখন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন?
১. যদি মলের সঙ্গে ক্রমাগত রক্তপাত হয় এবং মলের রং কালচে হয়।
২. দীর্ঘস্থায়ী পেটে ব্যথা বা ক্র্যাম্প অনুভূত হলে।
৩. কোনও কারণ ছাড়াই ক্লান্তি বা অবসাদ দেখা দিলে।
৪. পরিবারের কারও কোলন ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে।
অর্শ ভেবে ক্যানসারকে আড়াল করবেন না। বয়স ৪৫-৫০ পেরোলে নিয়মিত 'কোলোনোস্কপি' স্ক্রিনিং করানো প্রয়োজন। মনে রাখবেন, সময়মতো ধরা পড়লে কোলন ক্যানসার সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। লজ্জা নয়, সচেতনতাই সুস্থ জীবনের গোপন চাবিকাঠি।
