সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গ্রীষ্ম এবং বর্ষা- এই দুই ঋতুতেই ডিহাইড্রেশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে সবচাইতে বেশি। একদিকে অত্যাধিক গরমে বার বার ঘাম নির্গত হওয়ায় শরীরে জলশূন্যতা দেখা দেয়। অন্যদিকে বর্ষার আর্দ্রতায় ঘামের মধ্যে দিয়ে শরীরের জল বেরিয়ে গিয়ে ডিহাইড্রেশন হয়। তাই, এই দুই ঋতুতে পর্যাপ্ত জল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
কিন্তু অনেক সময় সারা দিনে ৩ থেকে ৪ লিটার জল খাওয়ার পরেও ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়। এতে মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, মুখ ও ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে বমি ভাবের মতো লক্ষণগুলি ফুটে ওঠে। এমনকী অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়। আপনি হয়তো অবাক হয়ে ভাবছেন, পর্যাপ্ত জল খাওয়ার পরেও ডিহাইড্রেশন দেখা দেওয়ার কারণ কী?
শুধুমাত্র জল পান করলেই শরীরের হাইড্রেশন বজায় থাকবে এমন ভাবনার কোনও কারণ নেই। সাধারণ জল খুব সহজেই শরীর গ্রহণ করে ঘাম ও মূত্রের মাধ্যমে দ্রুত নিঃসরণ করে দেয়। কিন্তু শরীরে হাইড্রেশন বজায় রাখার জন্য শুধু জল যথেষ্ট নয়। পুষ্টিবিদদের মতে, জলের সঙ্গে লেবু বা পুদিনা মেশালে তা শরীরের ইলেকট্রোলাইটের মাত্রা বজায় রাখে। এতে শরীরে জলের ধারণক্ষমতাও বাড়ে। সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ক্লোরাইডের মতো ইলেকট্রোলাইটগুলো কোষের ভিতরে এবং বাইরে জলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এতে শরীরে শক্তি বাড়ে। একইসঙ্গে প্রস্রাবের হার কমে। তাই বেশি জল খেলেই যে ডিহাইড্রেশন দূর হবে এমন ধারণা ভুল। শুধু তাই নয়। প্রতি ঘন্টায় কিডনি মাত্র এক লিটার জল শোধন করতে পারে। এর বেশি জল পান করলে কিডনিতে চাপ পড়ে। তাছাড়া ইলেকট্রোলাইট পূরণ না হয়ে শরীরে অতিরিক্ত জল পানের ফলে হাইপোনাট্রেমিয়া দেখা দিতে পারে।
এমনকী আপনি সারা দিনে কতটা জল পান করছেন, কীভাবে জল পান করছেন তাও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ জলের পরিবর্তে আপনি ডাবের জল পান করতে পারেন। এতে শরীরে জল ও খনিজের ভারসাম্য বজায় থাকে। একইসঙ্গে ফলের রস, ফল ও সবজি প্রভৃতি শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে। তাই, শুধুমাত্র জল খেলেই যে হাইড্রেশন বজায় থাকবে, এমনটা মোটেও নয়। শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় থাকলে আর ডিহাইড্রেশনের ভয় থাকে না।