অভিরূপ দাস: সকলের কাছে তিনি ‘দিদি’। কিন্তু মহিষাদলের দশ বছরের স্বপ্ননিকা তাঁকে ‘পিসি’ বলে ডাকে বাড়িতে। সেই ‘পিসি’ অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) একটি ছবিও এঁকে ফেলেছে স্বপ্ননিকা। সেই ছবি মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার দিতে চায় নিজের হাতে।
দশ বছরের একরত্তি আজ ‘মা’ কে ডাকতে পারছে মুখ্যমন্ত্রীর জন্যেই। মাত্র পাঁচদিন বয়সে জন্ডিস হয়েছিল স্বপ্ননিকার। অসুখে শুকিয়ে গিয়েছিল কানের নার্ভ। তারপর থেকেই চলে যায় শ্রবণ ক্ষমতা। মা তোতন বারিক বলছিলেন, ”মেয়ে আর কথা বলতে পারত না। শুনতেও পেত না।” সমস্ত বাচ্চারা ‘মা’ বলে ডাকছে। নিজের সন্তানের মুখ থেকে ‘মা’ ডাক শোনার জন্য আকুল হয়ে পড়েন তোতন। যে অস্ত্রোপচারে এই সমস্যা মিটত, তার নাম ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট (Cochlear implant)। লক্ষাধিক টাকা খরচ। স্বামীর ছোট্ট দোকানে ভর করে সে অস্ত্রোপচার সম্ভব ছিল না।
[আরও পড়ুন: পুরুলিয়ায় কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনে চাঞ্চল্য, ভাইরাল নিহতের ভাইপোর সঙ্গে IC’র কথোপকথন!]
বাড়িতে না জানিয়ে হরিশ মুখার্জি রোডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন তোতন। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীকে গিয়ে জানাই আমার মেয়ের কথা। উনি কথা দিয়েছিলেন সমস্যা মেটাবেন।” সেইমতো এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে ইএনটি বিভাগে ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট হয় খুদের। দায়িত্ব নেন ডা. অরুণাভ সেনগুপ্ত। স্বপ্ননিকার মা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সম্পূর্ণ অস্ত্রোপচারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ডা. অরুণাভ সেনগুপ্ত। ওনাদের সাহায্য ছাড়া এই লড়াই জিততে পারতেন না তিনি।
[আরও পড়ুন: মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার ‘শাস্তি’, ছাত্রীর মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ল স্বামী]
এখন গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে স্বপ্ননিকা। ছবি আঁকা তার ভীষণ পছন্দের। ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্টে এক বিশেষ যন্ত্র বসানো হয়েছে কানের উপরে। এই যন্ত্রের একেকটা ব্যাটারির দাম অনেক। আর্দ্রতা বেশি হওয়ার জন্য প্রায়ই ব্যাটারি যন্ত্রাংশ খারাপ হয়। সে মুশকিলও আসান। ডা. অরুণাভ সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের সহায়তায় এবার এই যন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণের খরচও দেওয়া হবে। স্বপ্ননিকা জানিয়েছে, “আজ পড়াশোনা করতে পারছি ওনার জন্যেই। মুখ্যমন্ত্রী অনেক জায়গায় আসেন। আমাদের গ্রামে এলে আমি নিজের হাতে ওনাকে ছবিটা দেব।”