shono
Advertisement

দর্শন পান না মহিলারা, জেনে নিন বছরভর মাটির কৌটোতে থাকা কালীপ্রতিমার মাহাত্ম্য

পুজোর দিন মাত্র চার ঘণ্টার জন্য কৌটো থেকে বের করা হয় প্রতিমাকে।
Posted: 08:26 PM Nov 08, 2020Updated: 10:43 PM Nov 08, 2020

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: কালীপ্রতিমার (Kali Puja 2020) উচ্চতা মাত্র তিন ইঞ্চি। অষ্টধাতুর নির্মিত। তিনি থাকেন একটি মাটির তৈরি কৌটোতে। বিষ্ণু মন্দিরে তাঁর অধিষ্ঠান। বছরে একবার মাত্র চার ঘন্টার জন্য বেরিয়ে আসেন। পুজো সারা হলেই ফের তাঁকে কৌটোয় বসিয়ে রেখে আসতে হবে তাঁর প্রিয় বিষ্ণু মন্দিরে। এভাবেই গত প্রায় তিনশো বছর ধরে চন্দ্রকোণা এক নম্বর ব্লকের পুড়শুড়ি গ্রামে সিংহ পরিবারের পূজিতা হয়ে আসছেন কৌটো কালী মা। দেবী প্রতিমাকে পুরোহিত ছাড়া কেউ দর্শন করতে পারেন না। মহিলারা তো রীতিমতো ব্রাত্য মাতৃদর্শনে। এমনকি ওই পরিবারের বাড়ির লোকজনও মাতৃদর্শন করেন না। 

Advertisement

কথিত আছে, সিংহ পরিবারের সঙ্গে বর্ধমান রাজার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। পুড়শুড়ি গ্রামের জমিদার রামচন্দ্র সিংহ এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন। শোনা যায় তারও আগে কৌটো কালীপুজো হত সিংহ পরিবারে। জমিদার রামচন্দ্র সিংহ মায়ের অধিষ্ঠানের জন্য মন্দির নির্মাণ করেছিলেন ১২৭৪ সালে। জমিদার নীলকন্ঠ সিংহ তাঁকে বিষ্ণু মন্দিরে ঠাঁই দেন। সারা বছর তিনি এই বিষ্ণু মন্দিরে অধিষ্ঠান করেন। কালীপুজোর সময় মাত্র চার ঘন্টার জন্য মন্দির থেকে দেবী প্রতিমাকে বের করা হয়। মন্দির থেকে কৌটো কালীকে বের করে একটি বেল গাছের ডালে রাখা হয়। পুজোর সমস্ত আয়োজন সম্পূর্ণ হয়ে গেলে দেবী প্রতিমাকে ডাল থেকে নামিয়ে পুজো শুরু করেন পুরোহিত। দেওয়া হয় ছাগল বলি। রীতি মেনে চার ঘন্টার মধ্যে পুজো ও ছাগল বলি সম্পন্ন করে ফের দেবীপ্রতিমা বিষ্ণু মন্দিরে রেখে আসেন পুরোহিত। কৌটোর মধ্যে থাকা মাকে কেবল দর্শন করতে পারবেন পুরোহিত ও আগ্রহী কোনও পুরুষ। কিন্তু কোনও মহিলা দেবীপ্রতিমাকে দর্শন করতে পারবেন না । পুজো মণ্ডপ থেকে শত হাত দূরে থাকতে হবে মহিলাদের।

[আরও পড়ুন: ধর্ষণের অভিযোগ উঠতেই উধাও বিজেপি নেতার ভাইপো, বাড়ির দেওয়ালেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার নোটিস]

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জমিদার নীলকন্ঠ কৌটো কালীর দেখভালের জন্য তাঁরই বিশ্বস্ত অনুচর বিভূতী ঘোষকে দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছেন। তাই ঘোষ পরিবারকে তিন বিঘা জমি দান করে গিয়েছেন জমিদার নীলকন্ঠ সিংহ। বর্তমানে এই ঘোষ পরিবারই মায়ের পুজো করে আসছে। পুজোয় সিংহ পরিবারের কোনও দায় নেই। ঘোষ পরিবারের সদস্য মলয় ঘোষ বলেন, “জমিদার বাড়ির প্রথা মেনে আজও আমরা কৌটো কালীর পুজোর আয়োজন করি প্রতি বছর। এ বছরও আয়োজন শুরু হয়েছে । মায়ের পুজোয় কোনও আড়ম্বর করা হয় না। এক রাতের জন্য তিনি বাইরে আসেন। মাত্র চার ঘন্টা থাকেন। তারপর আবার তাঁকে বিষ্ণু মন্দিরে রেখে আসতে হয়। দেবী খুব জাগ্রত।” সিংহ পরিবারের সদস্য কমল সিংহ বলেন, “আমাদের পূর্বতন জমিদার নীলকন্ঠ সিংহ তাঁর বিশ্বস্ত অনুচরকে মায়ের দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছেন। তাতে আমাদের পরিবারের কোনও দায় নেই। ঘোষ পরিবারই মায়ের পুজো করে আসছে প্রায় তিনশো বছর ধরে। আমরা কেবল নিমন্ত্রিত হয়ে উপস্থিত থাকি।”

[আরও পড়ুন: ‘একমাস পর দিদির পুলিশের দাঁত ভাঙবেন অমিত শাহ’, ফের বেফাঁস দিলীপ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার