সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কখনও সোনি বনাম প্লাজা। কখনও সোনি বনাম এডু। সোনির প্রতিদ্বন্দ্বী যিনিই হোন না কেন, তিনি ভিনদেশি। মোহনবাগান অধিনায়কের মতোই বিদেশি। ফলে তীব্র লড়াইয়ের একটা তাপ থাকেই। কিন্তু মঙ্গলবার সোনি নর্ডির লড়াই এমন একজনের সঙ্গে যিনি কিনা তাঁর দেশোয়ালি। শুধু এটুকু বললে কিছুই বলা হয় না। আসলে যুবভারতীতে দু’দলের দুই যুযুধান ফুটবলার হলেন শৈশবের বন্ধু। হাইতিতে সবুজ-মেরুনের হৃদপিণ্ড সোনি আর মণিপুরী টিম নেরোকার মাঝমাঠের স্তম্ভ ফ্র্যাঙ্কোসের বাড়ির দূরত্ব হাঁটাপথে বড়জোর মিনিট দশেক। তারচেয়েও বড় কথা, একই জায়গা থেকে ক্লাব স্তরে খেলেছেন। একই জায়গা থেকে জাতীয় দলে খেলেছেন। সেই শৈশবের বন্ধু জিয়ান ফ্র্যাঙ্কোস ফ্যাবিয়ান-ই এদিন সন্ধ্যায় নব্বই মিনিট পরম শত্রু সোনির।
[দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের ইউএসপি বিরাটের অ্যাগ্রেসন, মত বিশেষজ্ঞদের]
সোমবার নেরোকা—মোহনবাগান দু’দলই যুবভারতীর বাইরের মাঠে প্র্যাকটিস করল। ফ্র্যাঙ্কোসদের প্র্যাকটিস শেষ হয়ে যায় দুপুর বারোটায়। সোনিরা মাঠে ঢুকলেন প্রায় এক ঘণ্টা পর। বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে ততক্ষণ প্রায় দাঁড়িয়েছিলেন ফ্র্যাঙ্কোস। দেখা হতেই আপ্লুত দু’জনই। চলল হাইতি ভাষায় আড্ডা। পরে ফ্র্যাঙ্কোসকে অবশ্য সোনির বাগান সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল দেখা গেল। বললেন, “আমাদের চেয়ে ওরা অনেক শক্তিশালী। ওদের খেলা দেখেছি। প্রত্যেকে অভিজ্ঞ। প্রত্যেকে জানে, মাঠে কাকে কী করতে হবে। তার ওপর সোনি তো রয়েছেই। আমাদের টিমে অনভিজ্ঞ প্লেয়ারের সংখ্যা বেশি।” যার প্রতিধ্বনি শোনা গেল নেরোকা কোচ গিফট রাইকানের গলায়ও। “মোহনবাগান অনেক বড় দল। ওদের কে আছে কে নেই সেটা কোনও কথা নয়। তা সত্ত্বেও অবশ্য ওদের আসল শক্তি সোনি। আমরা শেষ দু’টো ম্যাচ জিতেছি। মোহনবাগান শেষ ম্যাচে ড্র করেছে। তবু ওদের আটকানো কঠিন।” এক নিঃশ্বাসে বললেন রাইকান।
[মধুচন্দ্রিমার পর এবার ভাইরাল বিরুষ্কার এই ছবি]
যদিও এই ম্যাচের আগে গভীর সমস্যায় মোহনবাগান। এমনিতেই দুর্বল শিলং লাজংয়ের সঙ্গে ড্র করে মানসিকভাবে সেরকম জমাট নেই। তারওপর কার্ড সমস্যায় নেরোকার বিরুদ্ধে নেই ডিফেন্সের অন্যতম বিদেশি শক্তি কিংসলে। সেই সঙ্গে আবার ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগেও পরিষ্কার নয়, ক্রোমা-সোনি মঙ্গলবার খেলবেন কি না। শেষ খবর, সোনি হয়তো খেলবেন, ক্রোমা অনিশ্চিত। বাগানের প্রাণভোমড়া এদিন প্র্যাকটিস শেষ করে গাড়িতে ওঠার সময় বললেন, “ডাক্তার আমাকে ওষুধ বদলে দিয়েছেন। ২০ মিনিট খেলতে পারলেও চাইছি শুরু থেকে মাঠে নামতে। ক্রোমাও হয়তো খেলবে।” কোচ সঞ্জয় সেন আবার বলছেন, “মঙ্গলবার সকালে বুঝতে পারব সোনিরা খেলতে পারবে কি না।” ডিফেন্স বাগান কোচকে যে ভাবাচ্ছে তা অকপটে স্বীকার করে নিলেন। “লাজং আর মিনার্ভার সঙ্গে আমরা ড্র করেছি। অথচ দু’টো ম্যাচেই আমরা আগে গোল করেছিলাম। কিন্তু গোল খেয়ে গিয়েছি। এখান থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।” নেরোকা নিয়ে মোহনবাগান কোচ বেশ সাবধানী। “দলটা ভাল। কলকাতায় খেলে যাওয়া বহু ছেলে আছে ওদের টিমে। চিডি এখনও দু’টো গোল করেছে। তাই ওদের নিয়ে ভাবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।” শুনে মনে হল, সঞ্জয়ের চিন্তায় ব্যাপকভাবে রয়েছে নেরোকা। নাকি তার চেয়েও বেশি করে নিজের শিবিরে সোনি-ক্রোমার ফিটনেস? সেটাই দেখার!
[শিখরে বাংলা, প্রথম বাঙালি হিসাবে সাতটি শৃঙ্গ জয় সত্যরূপ সিদ্ধান্তর]
The post যুবভারতীতে বাগানের মুখোমুখি নেরোকা, শৈশবের বন্ধুই শত্রু সোনির appeared first on Sangbad Pratidin.