সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে, সেই অভিযোগে এক হিন্দু ব্যক্তিকে (Hindu Man) গ্রেপ্তার করা হল পাকিস্তানের (Pakistan) হায়দরাবাদ থেকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে একটি মৌলবাদী সংগঠন। কোরান পুড়িয়ে দিয়েছে ওই ব্যক্তি, এমনই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কোরান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই দাবি তুলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বাড়ি ঘেরাও করে মৌলবাদী সংগঠনের সদস্যরা। তারপরেই গ্রেপ্তার করা হয় ওই ব্যক্তিকে। স্থানীয় হিন্দুদের মতে, যথাযথ তদন্ত না করেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া হিন্দু যুবকের নাম অশোক কুমার। তিনি পেশায় সাফাইকর্মী। গত শুক্রবার অভিযোগ ওঠে, ইসলাম ধর্মগ্রন্থের পাতা পুড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। সেই মর্মে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে মৌলবাদী সংগঠন তেহরিক-ই-লব্বাইক পাকিস্তান। জানা গিয়েছে, সেই অভিযোগকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি পুলিশ। তারপরেই রবিবার অশোকের বাড়ি ঘিরে প্রতিবাদ শুরু করে তেহরিকের সদস্যরা। হায়দরাবাদের এই ঘটনা নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। গ্রেপ্তার করা হয় অশোককে।
[আরও পড়ুন: ফিরল জর্জ ফ্লয়েডের স্মৃতি, অভিযুক্ত যুবকের বুকে হাঁটুর চাপ মার্কিন পুলিশের!]
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, অশোকের বিরুদ্ধে যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত করা হয়নি। সেই সঙ্গে বলেছেন, ওই বাড়িতে বসবাসকারী অন্য হিন্দু পরিবারগুলি যথেষ্ট ভীত হয়ে রয়েছে। বাড়ির বাইরেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তেহরিকের সদস্যরা। তার ফলে ভয় পাচ্ছেন হিন্দুরা। প্রসঙ্গত, গোটা হায়দরাবাদ জুড়েই প্রতিবাদ করেছে তেহরিকের সদস্যরা। অশোক কুমারের বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দার অভিযোগ দায়ের করতে হবে, এই দাবি করা হয়।
স্থানীয় হিন্দু নেতা রবি দাওয়ানি সিন্ধ প্রদেশের সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন,নিরপেক্ষভাবে গোটা ঘটনার তদন্ত করা হোক। প্রসঙ্গত, গতবছরের এপ্রিল মাসেই তেহরিককে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। পাকিস্তানে নিযুক্ত তৎকালীন রাষ্ট্রদূতকে বিতাড়িত করার দাবিতে প্রতিবাদ করেছিল এই সংগঠন। কিন্তু ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ফের তেহরিকের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেন।
পাকিস্তানে ধর্মনিন্দার আইন খুবই কঠোর বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বেশ কয়েকবার এই আইন সংশোধন করার প্রস্তাবও পেশ করা হয়েছে। অনেক সময়ই প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই আইনের অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করেন। ধর্মনিন্দা আইনের বলে গতবছরের ডিসেম্বর মাসে শ্রীলঙ্কার এক নাগরিককে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছিল।