সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পূর্বপুরুষের ভিটে-মাটি ফেলে একের পর এক হিন্দু পরিবার গ্রাম ছাড়ছে। মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) রথলাম (Rathlam) জেলার একটি গ্রামে এমন ঘটনা বেশ কিছুদিন ধরে চললেও সম্প্রতি নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে বিবৃতি দিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র (Narottam Mishra)। সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। কিন্তু কেন নিজেদের গ্রাম ছাড়ছেন হিন্দুরা?
রথলাম জেলার সুরানা (Surana) গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিযোগ, গ্রামের অপর সম্প্রদায়ের লাগাতার অত্যাচারের কারণেই তারা ভিটে-মাটি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতিনিয়ত তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক পোস্ট, বহু সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ডিলিট করল কেন্দ্র]
ইতিমধ্যে এই বিষয়ে রথলামের পুলিশ প্রধানের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। যদিও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশ কোনওরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে তারা পূর্বপুরুষের খেত-খামার, জমি, বাড়ি ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে গ্রাম ছাড়ছেন।
সুরানার জনসংখ্যা ২২০০। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ মুসলিম, ৪০ শতাংশ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। স্থানীয়দের বক্তব্য, দীর্ঘ বছর ধরে দুই সম্প্রদায় মিলেমিশে বসবাস করছিলেন। কিন্তু গোলমাল শুরু হয়েছে সম্প্রতি। হিন্দুদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে। হিন্দুদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগে একাধিক এফআইআর করা হয়েছে। হিন্দু গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ইদানিং সব বিষয়ে অপর সম্প্রদায় কর্তৃত্বের চেষ্টা করছে। এতটাই অত্যাচার শুরু হয়েছে যে হিন্দুরা বাধ্য হয়ে গ্রাম ছাড়ছেন। গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। উলটে দুই সম্প্রদায়কেই হেনস্তা করছে তারা।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অশান্তি আর ঘটবে না, আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলিকে আশ্বাস ঢাকার]
ইতিমধ্যে এই বিষয়ে রথলামের জেলা শাসকের কাছে হিন্দু সম্প্রদায়ের তরফে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হয়নি বলেই তাঁরা জানাচ্ছেন।
এদিকে সুরানার সাম্প্রদায়িক অশান্তি নিয়ে টুইটারে ভি়ডিও বিবৃতি দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। ভিডিওতে তিনি বলেন, “অবৈধ অধিগ্রহণ ও অন্য কিছু ছোট বিষয়ে গোলমাল রয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে। শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ প্রধান। দুই সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদেরও রাখা হয়েছে সুরানার সমস্যা সমাধানে। আপাতত একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ব্যবস্থা হয়েছে গ্রামে। দুষ্কৃতীরা যাতে ঘটনার সুযোগ নিতে না পারে তার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন।”