কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: গুজরাটের অমিত শাহকে (Amit Shah) বাংলার ডেলিকেসি নলেন গুড়ের পায়েস খাওয়াতে হন্যে নবীন বিশ্বাস। কারণ, বাজারে এখনও দেখা মেলেনি গুড়ের। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে বাগুইআটি থানার জগৎপুর শিমুলতলা আদর্শপল্লিতে ওই ব্যক্তির বাড়িতেই যে মধ্যাহ্নভোজ করার কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র। আর শেষপাতে তাঁকে নলেনগুড়ের পায়েসই খাওয়াতে চান নবীনবাবু। এদিন দুপুরে নবীনবাবুর বাড়ির অদূরে জ্যোতিনগর নিউ আদর্শপল্লিতে শ্রীশ্রী হরি গুরুচাঁদ মন্দিরেও যাওয়ার কথা রয়েছে শাহের।
অমিত শাহ’র জন্য নিরামিষ বাঙালি পদ দিয়ে মেনু সাজিয়েছেন নবীন ও তাঁর স্ত্রী সুচন্দ্রা বিশ্বাস। নিজে হাতে সেদিন রান্না করবেন গৃহকর্ত্রী। মাটির থালা-বাটিতে অমিত শাহকে দেওয়া হবে শুক্তো, ছোলার ডাল, বেগুনভাজা, মুগের ডাল, পনিরের তরকারি আর জলপাইয়ের চাটনি। থাকবে বাসমতি চালের ভাত এবং রুটি দুই-ই। শেষপাতে থাকবে নলেন গুড়ের পায়েস। প্রাক শীত মরশুমে বাজারে এখনও ওঠেনি নতুন গুড়। তাই বাঙালির এই সিগনেচার পদটির সঙ্গে গোটা দেশের পরিচিতি ঘটাতে দু’দিন ধরে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ঘুরতে হচ্ছে আসবাব ব্যবসায়ী নবীনবাবুকে। মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত মধ্যবয়স্ক এই ব্যক্তির তিনতলা বাড়ি এখন কার্যত একটা দুর্গের চেহারা নিয়েছে। এই বাড়ির তিনতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে একবারের জন্য হলেও সাধারণ মানুষের অভিবাদন গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানানো হবে অমিত শাহকে। জানা গিয়েছে, পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মঙ্গলবার ওই বাড়ির প্রত্যেকের কোভিড টেস্ট করা হয়েছে। প্রত্যেকেরই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জানিয়েছেন নবীনবাবু।
[আরও পড়ুন: ‘বেআইনিভাবে বিক্রি হচ্ছে দুর্গাপুর ব্যারেজের জল’, অভিযোগ আলুওয়ালিয়ার, পালটা দিলেন মেয়র]
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নবীনের বাড়ির চারপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ির ছাদের দখল সাময়িকভাবে নিয়ে নেবে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। বাড়ির চারপাশ মুড়ে ফেলা হবে নিরাপত্তার চাদরে। এই একই ব্যবস্থা হরি গুরুচাঁদের মন্দিরেও। মন্দির কমিটির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, খালি পায়ে প্রবেশ করবেন অমিত শাহ। মাটিতে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে রীতি অনুযায়ী। প্রবেশের সময় দু’শো জন মহিলা লালপাড় সাদা শাড়ি পরে তাঁকে স্বাগত জানাবেন। থাকবে মতুয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য মেনে ডঙ্কাবাদন এবং নিশান ওড়ানোর ব্যবস্থা। পুজো দেওয়ার আগে এই সম্প্রদায়ের প্রতীক হিসাবে অমিত শাহকে দেওয়া হবে আচিয়ার মালা। প্রসাদ হিসেবে থাকবে একটি বিশেষ দোকানের সন্দেশ। বাগজোলা খাল সংলগ্ন এই অঞ্চলটি মতুয়া সম্প্রদায় অধ্যুষিত। ভিআইপি রোড থেকে নিউটাউন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে এই সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের এখানে সংখ্যাধিক্য বলে জানিয়েছেন শ্রীশ্রী হরিচাঁদ গুরুচাঁদ মতুয়া মহাসংঘ (বাগজোলা অঞ্চল)-এর সভাপতি মনোজকুমার ব্রহ্ম। প্রসঙ্গত, এই সংগঠনের আমন্ত্রণেই মন্দিরে পা পড়তে চলেছে অমিত শাহের।
দেখুন ভিডিও: