দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ব্রাজিলে আসন্ন ডেফ অলিম্পিকের টেবিল টেনিসে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে চলেছেন উত্তরপাড়ার শ্রীজিত মজুমদার। ব্রাজিলে ১মে থেকে ১৫ মে পর্যন্ত এই অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হবে। SAI ন্যাশনাল সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে ২৪তম ডেফ অলিম্পিকের (Deaflymipics) জন্য ওপেন ট্রায়ালে জাতীয় স্তরে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন শ্রীজিত। সেই সুবাধেই তিনি অলিম্পিকে দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেয়েছেন।
অনন্য প্রতিভার অধিকারী শ্রীজিত (Srijit Majumdar) বর্তমানে বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। তবে, কর্পোরেট চাকরির সঙ্গে সমান তালে চালিয়ে গিয়েছেন খেলাধুলোও। শ্রীজিৎ যখন নবম শ্রেণীর ছাত্র তখন তার বাবা মারা যান। তারপর থেকেই কঠিন লড়াই শুরু হয় তার। মা সুজাতা মজুমদার ছেলেকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সমান তালে লড়াই চালিয়ে যান।
[আরও পড়ুন: বারবার এই শটেই আউট রোহিত, বাঁচার উপায় বললেন গাভাসকর]
সুজাতাদেবী জানান পড়াশোনা থেকে শুরু করে খেলাধুলো সর্বক্ষেত্রে প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েই ছেলে তাঁর লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছেন। তিনি জানান, ছেলের যখন তিন বছর বয়স তখন তারা লক্ষ্য করেন ছেলেকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করলে তার কোনো প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এরপরই তারা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান এবং সেখানেই নিশ্চিত হন যে ছেলে কানে শুনতে পায় না। তবে সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে ছেলে সাফল্যের সঙ্গে বিসিএ পাশ করার পর বেঙ্গালুরুতে চাকরি পায়। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে পাঁচ বছর বয়সে শ্রীজিত টেবিল টেনিস (Table Tennis) খেলার প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করে।
[আরও পড়ুন: এক সপ্তাহ হয়ে গেল শেন ওয়ার্ন নেই, মেলবোর্নে আনা হল কিংবদন্তি স্পিনারের দেহ]
শ্রীজিত জানিয়েছেন প্রথমে পার্থপ্রতিম দত্ত পরে প্রদীপ সামন্ত, অভিজিৎ রায়চৌধুরী ও আশীস ধরের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরই তাঁর এই সাফল্য এসেছে। তবে শ্রীজিতের মায়ের আক্ষেপ এখনও পর্যন্ত সরকারি স্তরে কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি। তিনি রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করেছেন। ছেলের বিষয়ে বলার পর মন্ত্রী তাঁকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। শ্রীজিতের লক্ষ্য এখন একটাই, যে কোনও মূল্যে দেশেকে একটি পদক উপহার দিতে হবে। সেই লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহে ব্রাজিলের উদ্দেশে রওনা দিতে চলেছেন শ্রীজিত।