সুপর্ণা মজুমদার: লিঙ্গ পরিচয় বড় পরিচয়। আর এই অধিকার শুধু নারী-পুরুষের নয়, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদেরও রয়েছে। কিন্তু সমাজ কি তা মানে? LGBTQIA+ শব্দের পুরো অর্থ ক’জন বলতে পারবেন? লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্স্যুয়াল, ক্যুইয়ার, ইন্টারসেক্স, আসেক্স্যুয়াল, রূপান্তরকামী, রূপান্তরিতরাও যে মানুষ, সেটা এই আধুনিক সমাজে কতজন মনে রাখেন? হাততালি দেওয়া বৃহন্নলার জন্য ক’জন ভাবেন? এমনই কিছু প্রশ্নের মুখে দাড় করাল সুস্মিতা সেন অভিনীত ‘তালি’ (Taali)।
রূপান্তরিত সমাজকর্মী শ্রীগৌরী সাওয়ান্তের বায়োপিক ‘তালি’। নাম ভূমিকায় সুস্মিতা সেন (Sushmita Sen)। গণেশ হয়ে জন্মেছিলেন গৌরী। বাবা ছিলেন পুলিশকর্মী। কিশোর বয়সে ঘর ছাড়ে গণেশ। চলে আসে মুম্বই। তারপর শুরু হয় পরিচয়ের লড়াই, আত্মসম্মানের লড়াই আর অধিকারের লড়াই। ভারচুয়াল জগতের সৌজন্যে এ গল্প অনেকেরই জানা। জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালক রবি যাদব সেই সময় থেকে কাহিনি শুরু করেছেন যখন সুপ্রিম কোর্টে তৃতীয় লিঙ্গের অধিকারের লড়াই চলছে। আর বিচার ঘোষণার অপেক্ষা।
[আরও পড়ুন: বলিউড নষ্ট করে দিয়েছেন শাহরুখ খান! বিস্ফোরক মন্তব্য বিবেক অগ্নিহোত্রীর]
কী বিচার হয়? তা জানতেই আদলতের পথে রওনা দেয় গৌরী (সুস্মিতা)। যাওয়ার পথেই বিদেশি সাংবাদিককে নিজের জীবনের কাহিনি বলতে থাকে। এমন গল্প সকলের জানা প্রয়োজন। যাঁদের বোঝার মন আছে বুঝবেন। বাকিটা ব্যক্তিগত। মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা তো সকলেরই রয়েছে। এই স্বাধীনতার কথাই বলে ‘তালি’।
সিরিজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একজনকেই চোখে পড়েছে। তিনি সুস্মিতা সেন। শ্রীগৌরী সাওয়ান্তের চরিত্রে প্রাক্তন ব্রহ্মাণ্ড সুন্দরী নিজেকে উজার করে দিয়েছেন। শ্রীগৌরীর ছোটবেলার চরিত্রে দাপট নিয়ে অভিনয় করেছেন ক্রুতিকা দেও। এই দু’জনই ছয় এপিসোডের সিরিজের মূল স্তম্ভ। বাকিরা পার্শ্ব চরিত্র হিসেবে নিজ নিজ ভূমিকা পালন করেছেন। তবে পরিচালক গল্পের কিছু জায়গা কেবলমাত্র ছুঁয়ে গিয়েছেন। সিনেমা হলে তা মানা যেত, কারণ তার পরিসর স্বল্প। কিন্তু সিরিজে বিস্তারিত ব্যাখ্যার সুযোগ রয়েছে। গৌরীর দত্তক নেওয়া মেয়েকে সেভাবে দেখাই গেল না। অবশ্য, খামতি থাকলেও ‘তালি’র মতো সিরিজ হওয়া প্রয়োজন, তাতে যদি দৃষ্টিভঙ্গির কিছু তফাত হয়! আশা তো রাখতেই হবে তাই না?
ওয়েব সিরিজ – তালি
অভিনয়ে – সুস্মিতা সেন, ক্রুতিকা দেও, অঙ্কুর ভাটিয়া, ঐশ্বর্য নারকার, হিমাঙ্গী কবি, সুভরত যোশী
পরিচালনায় – রবি যাদব