অভিরূপ দাস: যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে।
বাড়ির হাজারও কাজ সামলে মায়েরা নির্বাচনের ময়দানে। আজ রবিবার আর্ন্তজাতিক মাতৃদিবসে তাঁরা ভীষণ ব্যস্ত। সন্তানের সঙ্গে কেক কাটা নেই। চেনা টেবিলে পছন্দের খাবারও দূরঅস্ত। ডাল-ভাত খেয়েই দৌড়তে হবে পাড়ায় পাড়ায়।
শেষ চারদফা ভোট বাকি বাংলায়। শেষ লগ্নে দম ফেলার ফুরসত নেই ‘মা’য়েদের। "সন্তানের থেকে দূরে। মাতৃদিবস কাটবে পথে পথেই।" বলছেন তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম, এসইউসিআই-র মহিলা প্রার্থীরা।
[আরও পড়ুন: ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ, ‘দল যার যার, ভোটার দিলীপ ঘোষের’]
ফি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারে সারা পৃথিবী জুড়ে পালিত হয় মাতৃদিবস। থিম?" একই জল একই পানি সাগরে সাগরে নাচে। প্রথম মায়ের প্রসব বেদনা পৃথিবীর মনে আছে।" আছে বৈকি। দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী মালা রায়ের কন্যা প্রমিতি ফোন করেছেন আগেভাগেই। শনিবারই মাকে আর্ন্তজাতিক মাতৃদিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রমিতি। কেক কাটবেন?
"মাদার্স ডে পালনের উপায় কোথায়?’’ মালা রায়ের কথায়,"আজ সারাদিন প্রচারে ব্যস্ত থাকব। সকালে ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডে পদযাত্রা রয়েছে। বিকেলে আবার মিটিং। মাতৃদিবসটা কাটবে রাস্তায়-মিটিংয়ে।’’
লোকসভা ভোটের প্রচারে অনেকে বাড়ি থেকে কয়েক যোজন দূরে। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় যেমন। ছেলে ‘প্রেম’ এবছর চব্বিশে পা দিল। নির্বাচনের প্রচারে ব্যস্ত লকেটের নাওয়া খাওয়ার ফুরসত নেই। রোদ ঝড় জল মাথায় করেই বেরিয়ে পড়তে হচ্ছে। এই কদিন আগেই গিয়েছে ছেলের জন্মদিন। ‘‘চব্বিশ বছরে এই প্রথম জন্মদিনে ছেলের থেকে দূরে ছিলাম।’’ দীর্ঘশ্বাস ফেলেন প্রার্থী। আজ মাতৃদিবসটাও তার দূরে দূরেই কাটবে। ভরসা মুঠোফোন। ‘‘ভাগ্যিস মোবাইলটা ছিল। যেখানেই থাকি জানি ছেলে ঠিক ফোন করবে। বলবে হ্যাপি মাদার্স ডে।’’
[আরও পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যে এবার পরমাণু যুদ্ধ? ইরানের হুঁশিয়ারির পর বাড়ছে আশঙ্কা]
লকেটের বিপক্ষে এই প্রথম নির্বাচনের ময়দানে অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল প্রার্থীরও মাতৃদিবস কাটবে প্রচারে প্রচারে। এই প্রথম মাতৃদিবসে ছেলে প্রণিল বসুর থেকে অনেকটা দূরে তিনি। সারা পৃথিবী জুড়ে যখন সেলিব্রেশন। আর্ন্তজাতিক মাতৃদিবসে রচনা পায়ে পায়ে হাঁটবেন সিঙ্গুরের অলিতে গলিতে।
তবে প্রচার শেষে মাতৃদিবস পালন করবেন শায়রা শাহ হালিম। দক্ষিণ কলকাতার সিপিএম প্রার্থী রাতে ছোট মেয়ের সঙ্গে যাবেন ‘ডিনার’-এ। বড় মেয়ে নুর পড়াশোনা করেন লন্ডনে। ছোট্ট ফরিস্তা নাছোড়। ‘‘মাদার্স ডে পালন করতেই হবে।’’ ওর জেদের কাছে আমার কথা চলবে না। জানিয়েছেন শায়রা।
এদিকে মাতৃদিবস নিয়ে অনুভূতি থাকলেও কখনও তা সেভাবে পালন করেননি কল্পনা নস্কর। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের এসইউসিআই প্রার্থী কুর্ণিশ জানিয়েছেন মায়েদের। তিনি নিজেও তো একজন মা। ছেলে শৌভিক চাকরি করে। শুভেচ্ছা? ‘‘সন্তান আর মায়ের সম্পর্ক চিরকালীন। মাতৃদিবসে আলাদা করে শুভেচ্ছা না জানালেও তাতে কিচ্ছু হবে না।’’ জানিয়েছেন কল্পনাদেবী।