গৌতম ব্রহ্ম: দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্ষণের খবর বিচলিত করছে সকলকে। মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই আবহে মহিলাদের সুরক্ষায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিলেন বাংলার এক ইঞ্জিনয়র ছাত্র। তাঁর তৈরি 'ইন্টারনেট-সাহায্যপ্রাপ্ত জরুরি সতর্কতা ও আত্মরক্ষার্থে বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন গ্লাভস' সম্প্রতি পেটেন্ট পেয়েছে। মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের প্রেক্ষিতে, এই গ্লাভসটিকে একটি সম্ভাব্য গেম চেঞ্জার হিসাবে দেখা হচ্ছে।
ইন্সটিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের (আইইএম) প্রাক্তন ছাত্র মৈনাক মণ্ডল। আইইএমে পড়াকালীন এই প্রকল্পের ধারণা পান মৈনাক। শিক্ষকদের সহযোগিতা এবং গাইডেন্সে তাঁর এই আবিষ্কার বাস্তব রূপ পায়।
কী কাজ করবে এই গ্লাভস? জানা গিয়েছে, জরুরি পরিস্থিতিতে সতর্কবার্তা পাঠানোর পাশাপাশি আত্মরক্ষার্থে বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এই গ্লাভস। এই ডিভাইসের সাহায্যে হঠাৎ কোনও বিপদের মুখোমুখি হলে ব্যবহারকারী মহিলা আততায়ীর বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবেন। ততক্ষণে সর্তকবার্তা পৌঁছিয়ে যাবে। অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথম কিছুক্ষণ সময়কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। সেই সময় প্রতিরোধ করা গেলে অনেক সময় হামলাকারী পিছিয়ে যেতে পারে বলে মানা হয়। সেক্ষেত্রে এই গ্লাভস কার্যকরী ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মহিলাদের সুরক্ষায় অভিনব উদ্ভাবনের পেন্টেট পাওয়ার পর মৈনাক বলেন, "আমার মেন্টর প্রবীর কুমার দাস, অভিজিৎ বোস এবং অরুণ কুমার বারের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। তাঁরা সর্বদা আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই আমাদের ডিরেক্টর অধ্যাপক ড.সত্যজিৎ চক্রবর্তীকেও, যাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ও নেতৃত্ব আমাকে এই পেটেন্ট অর্জনে সাহায্য করেছে।"
মৈনাকের এই সাফল্য আইইএমের উদ্ভাবনী ও গবেষণা-ভিত্তিক শিক্ষার সংস্কৃতিকে প্রতিফলিত করে। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকমণ্ডলী ও কর্তৃপক্ষ মৈনাককে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, "তাঁর এই আবিষ্কার নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে। এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে সামাজিক পরিবর্তন আনার পথে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।" শুধু এই গ্লাভসই নয়, আইইএম-এ পড়াকালীন মৈনাক আরও বেশ কিছু উচ্চপ্রযুক্তির প্রকল্পে কাজ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল 'শক্তি'। যা ভারতের প্রথম দেশীয় মাইক্রোপ্রসেসর তৈরির প্রকল্প।