মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: ছোটবেলা থেকে মায়ের মতো শ্রদ্ধা করেন লতা মঙ্গেশকরকে (Lata Mangeshkar)। তাই শিল্পীর প্রয়াণের পর ছেলের কর্তব্য পালন করলেন অমল বিলুই। নেড়া হয়ে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের সমস্ত নিয়ম মানলেন হাওড়ার বাসিন্দা।
লতা মঙ্গেশকরের হাসপাতালে ভরতি হওয়ার খবর শোনার পর থেকেই মনটা খচখচ করছিল হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের দর্জি অমল বিলুইয়ের। তবুও মনকে আশ্বাস দিচ্ছিলেন প্রিয় শিল্পী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসবেন। তা আর হল না গত রবিবার সময় তখন সকাল প্রায় সাড়ে ন’টা। অন্যান্য দিনের মতো দোকানে বসে লতা মঙ্গেশকরের গান শুনতে শুনছিলেন তিনি। হঠাৎ এক বন্ধুর ফোনে যেন আকাশ ভেঙে পড়ে অমলের মাথায়। জানতে পারেন লতা মঙ্গেশকর আর নেই। প্রয়াত মাতৃসম শিল্পী। কার্যত কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন তিনি। খবর শোনার পর চোখে জল এসে যায় তাঁর।
[আরও পড়ুন: কেন লাইনচ্যুত বিকানের এক্সপ্রেস? কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটির রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য]
কোনরকমে দোকান বন্ধ করে সোজা বাড়িতে চলে এসেছিলেন অমল। আজীবন মায়ের মতো শ্রদ্ধা করেছেন লতা মঙ্গেশকরকে। তাই মায়ের প্রয়াণে যেভাবে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করতে হয়, তাই করলেন হাওড়ার বাসিন্দা। বৃ্হস্পতিবার সকালে হিন্দু ধর্মমত অনুযায়ী নেড়া হয়ে স্নান করে ঘাট কাজ করেন অমল বিলুই। শুক্রবার তিনি শ্রাদ্ধশান্তির আয়োজন। শনিবার করবেন নিয়ম ভঙ্গ পালন। তার সাধ্যমত লোকও খাওয়াবেন অমল। তাঁর কথায়, “লতা মঙ্গেশকর ছিলেন আমার মায়ের মতো। খবর শোনার পর সারা দিন কেঁদেছি। ভাল করে খাওয়া-দাওয়া করতে পারিনি। মন মেজাজ খুবই খারাপ ছিল। তার আত্মার শান্তির জন্য এইটুকু করতে পারলে আমার মন শান্তি পাবে।”
অমল জানিয়েছেন, ১২ বছর বয়সে স্কুলে পড়তে পড়তেই তিনি লতা মঙ্গেশকরের গানের ভক্ত হয়ে পড়েন। পথে ঘাটে দোকানে যেখানেই তিনি লতার শুনতে পেতেন সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়তেন। গান শেষ হলে তবে সরতেন। বেশ কয়েকবছর এভাবে চলতে থাকে। পরে তিনি টাকা জমিয়ে বাড়িতে একটি রেকর্ড প্লেয়ার কেনেন। পরে টেপ রেকর্ডার। এখন তো মোবাইলেই গান শোনেন। “শিল্পীর ২০০টি রেকর্ড, ৫০০টি ক্যাসেট কিনেছিলাম। এখন যদিও সেসব নষ্ট হয়ে গেছে। লতাজির গানে আমি মায়ের ভালবাসার অনুভূতি পাই”, বলেন অমল।