shono
Advertisement

চিকিৎসা গবেষণায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে দেহ দান করলেন নিরক্ষর কমলা

চোখ দান করা হল প্রভা আই ব্যাংকে।
Posted: 08:18 AM Jun 01, 2021Updated: 11:53 AM Jun 01, 2021

অভিরূপ দাস: স্কুলের চৌকাঠ মাড়াননি কোনওদিন। নাম সই কর‍তে পারতেন না। তবু তাঁর চেতনা, অনুভূতি ডিগ্রিধারী অনেক মানুষের চেয়ে কয়েক কদম এগিয়ে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা গবেষণার কাজে নিজের দেহ দান করে সে প্রমাণ রাখলেন হাওড়ার সলপের বাসিন্দা কমলাদেবী। ৯৭ বছরের বৃদ্ধার মরদেহ দান করা হল কলকাতা মেডিক্যালে। ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীদের শব ব্যবচ্ছেদের ক্লাসে কাজে আসবে ওই দেহ। তাঁর দুটি চোখ দান করা প্রভা আই ব্যাংকে। আগামী দিনে কোনও দৃষ্টিহীনের দৃষ্টি ফেরাবে কমলাদেবীর কর্নিয়া।

Advertisement

[আরও পড়ুন: রাজ্য পুলিশে বড়সড় রদবদল, কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে মেদিনীপুরের ডিআইজি]

মরণোত্তর দেহদানের কথা শুনেছেন অনেকেই। কিন্তু শেষমেশ তা থেকে পিছিয়ে আসে পরিবার। অঙ্গীকার করেও দান করে না দেহ। করোনা আবহে কার্যত থমকে মরণোত্তর দেহদানের কাজ। মরণোত্তর দেহদান আন্দোলন সম্পর্কিত সংস্থা গণদর্পণের পক্ষ থেকে শ্যামল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, করোনা আবহে পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, সচেতন পদক্ষেপ হিসেবে করে যাওয়া দেহদানের অঙ্গীকার বহু ক্ষেত্রেই হার মানছে ভাইরাসের কাছে। প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য সংখ্যায় অঙ্গ বা দেহদানের ইচ্ছে প্রকাশ করে আবেদন জমা পড়ছে।কেন জরুরী মরণোত্তর দেহদান? মানবজীবন শেষ হয়ে নশ্বর দেহের ঠাঁই হয় চিতায় কিম্বা কবরে। এভাবে ফুরিয়ে যাওয়া না পসন্দ ছিল নিরক্ষর কমলাদেবীর? তাঁর নাতি মণীশ সরকার জানিয়েছেন, দিদা বারবারই বলতো ছাই হয়ে যাবো কেনো? এমন কিছু করবো যাতে আমার মৃতদেহ ফের আলো জ্বেলে যেতে পারে।

কমলা মাঝি

মরদেহ মূলত দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগে। ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীদের শব ব্যবচ্ছেদে ব্যবহৃত হয়। এই দেহ দিয়েই পড়াশোনা করেন ডাক্তারির ছাত্ররা। অন্যদিকে অঙ্গ প্রতিস্থাপনেও ব্যবহৃত হয় মরদেহ। জীবিত অবস্থাতেও যেমন চামড়া, অস্থিমজ্জা বা দুই কিডনির একটি অন্যকে দান করা যায়, মৃতের শরীর থেকে লিভার, চোখের কর্নিয়া, হৃদপিণ্ড, ফুসফুস ও কিডনি- মূলত এই পাঁচটি প্রত্যঙ্গ এবং চোদ্দটি কলা সংগ্রহ করে অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন করা যায়। তবে তা করতে হয় অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে।

একে সচেতনতার অভাব, তার উপরে করোনা পরিস্থিতি। দুইয়ে মিলে এই মুহূর্তে বড়সড় প্রশ্নের মুখে মরণোত্তর দেহ এবং অঙ্গদানের উদ্যোগ। এই সময় নিরক্ষর একজন মহিলার এহেন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বয়সজনিত কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন কমলাদেবী। সোমবার সকাল ৬টায় মারা যান হাওড়ার সলপের বাসিন্দা কমলা মাঝি। কমলা দেবীর নাতি গণদর্পণের সম্পাদক মণিশ সরকার জানিয়েছেন, দিদার শেষ স্বপ্নই ছিল দেহদান। পড়াশোনা না জানায় টিপছাপ দিয়েই দেহদান করে গিয়েছিলেন। সেইমতো কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তুলে দেওয়া হয়েছে মৃতদেহ।

[আরও পড়ুন: বাড়ছে যাত্রী সংখ্যা, জুনেই চালু হতে চলেছে ১০টি দূরপাল্লার ট্রেন]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement