সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে দিয়েগো মারাদোনার (Diego Maradona) চিকিৎসক লিওপল্ডো লুকে-র বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ তুলে বিতর্কের আগুন জ্বালিয়েছেন কিংবদন্তির তিন মেয়ে। ধিকিধিকি জ্বলতে থাকা সেই আগুনই এ বার পূর্ণ দাবানলের আকার নিল। প্রয়াত বিশ্বখ্যাত ফুটবলারের ভাই হুগো মারাদোনাও (Hugo Maradona) দাবি তুললেন, ফুটবল ঈশ্বরের হৃদরোগে মৃত্যুর তদন্ত করা হোক।
হুগো বললেন, “আর্জেন্টাইন পুলিশের উচিত দিয়েগোর মৃত্যুর তদন্ত করা। আমি ন্যায় চাই। যদি দেখা যায় দিয়েগোর চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল, তা হলে সেটার পিছনে যারা দায়ী তাদের শাস্তি দেওয়া হোক। অনেকেই দেখছি অনেক নাম বলছে। আমিও এমন অনেককে জানি যারা কঠিন মুহূর্তেও দিয়েগোর পাশে ছিল না। আমি একবার বুয়েনস আইরেস পৌঁছই। তারপর সবার নাম বলব।”
[আরও পড়ুন: শেষ ওয়ানডে হারলেই লজ্জার রেকর্ড গড়বেন কোহলিরা, কেমন হতে পারে ভারতের প্রথম একাদশ?]
সুদূর রোমে থাকলেও প্রতি শুক্রবারই নিয়মিত ভাইয়ের সঙ্গে কথা হত হুগোর। যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, মারাদোনা ঠিকই সময় বার করতেন নিজের দাদার সঙ্গে কথা বলার জন্য। তবে আর ফোনে তাঁর প্রিয় দিয়েগোর গলা শুনতে পাবেন না ভেবে সাক্ষাৎকার চলাকালীন অঝোরে কাঁদতে শুরু করেন হুগো। বললেন, “আমার দাদা একদম মাটির মানুষ ছিল। প্রতি শুক্রবার দিয়েগোর সঙ্গে কথা হত। অনেক বিষয় নিয়েই আমরা আড্ডা দিতাম। মাঝে মাঝে এমনও হত বারবার ফোন করে দিয়েগো আমার ঘুম ভাঙিয়ে দিত। ঠাট্টা করে বলত, আর কত ঘুমোবি। বিশ্বাসই হচ্ছে না আমার ভাই আর নেই।”
দাদার শেষকৃত্যে না থাকতে পারার জন্য মানসিকভাবে তিনি ভেঙে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন হুগো। তাঁর কথায়, “করোনার জন্য রোজ রোম থেকে বুয়েনস আইরেসের ফ্লাইট পাওয়া যাচ্ছে না। আমি তাই দিয়েগোর শেষকৃত্যে থাকতে পারিনি। তার উপর আবার ডালমা আর জিয়ানিনাও ফোনে বলল ভক্তদের ভিড়ের জন্য ওরা দ্রুত মারাদোনার শেষকৃত্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানতাম আমি সময় মতো বুয়েনস আইরেসে পৌঁছতে পারব না।”
[আরও পড়ুন: দিয়েগো মারাদোনাকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে রাজি হলেন না এই মহিলা ফুটবলার, কেন জানেন?]
রোম থেকে একটু দূরে থাকা নেপলসও সেই অভিশপ্ত ২৫ নভেম্বর পর থেকেই কাঁদছে। নাপোলির সর্বকালের সেরা ফুটবলার মারাদোনার প্রয়াণে গোটা শহর জুড়ে শ্মশাণের নিঃস্তব্ধতা। যা নিয়ে হুগো বলছেন, “নাপোলিতে প্রতিটা রাস্তায় দিয়েগোর বড় ব্যানার লাগানো হয়েছে। সবাই ওর ছবির নীচে গোলাপ রেখে যাচ্ছে। অনেকে আবার মোমবাতি জ্বালাচ্ছে। আসলে আমার দাদা নেপলসের জন্য নিছক ফুটবলার ছিল না। বরং ছিল স্বপ্নের সেই নায়ক যে নাপোলির মতো অনামী ক্লাবকে করে তুলেছিল ইউরোপের অন্যতম সেরা।”