সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহম্মদ শামিকে (Mohammed Shami) বল হাতে নিয়ে দৌড়তে দেখলে কপিল দেবের (Kapil Dev) কথা মনে পড়ে যায়! শামি উইকেট পাওয়ার ওঁর সেলিব্রেশন দেখলে মনে হয় যেন ‘হরিয়ানা হ্যারিকেন’ উল্লাস করছেন! এমনটাই দাবি করলেন সুনীল গাভাসকর (Sunil Gavaskar)। হাতে মাত্র ২২৯ রানের পুঁজি। আধুনিক যুগের ক্রিকেটে এই রান তাড়া করে জেতা মোটেও কঠিন নয়। তবে ইংল্যান্ডের (England) ব্যাটিংকে ক্লাবস্তরে নামিয়ে টিম ইন্ডিয়াকে ১০০ রানে জয় এনে দিলেন ‘সহেসপুর এক্সপ্রেস’। বাইশ গজে আগুনে বোলিং করে নিলেন ২২ রানে ৪ উইকেট। এহেন শামির প্রশংসা করতে গিয়ে সানি অকপটে জানিয়ে দিলেন যে, শামিকে দেখলে তাঁর কপিলের কথা মনে পড়ে যায়।
শামি ও জশপ্রীত বুমরাহের (Jasprit Bumrah) দাপটে ইতিমধ্যেই সেমিফাইনালে চলে গিয়েছে ভারতীয় দল। এর পর শামির আগুনে স্পেল নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে লিটল মাস্টার বলেছেন, “শামিকে দেখলে আমাদের প্রজন্মের কথা মনে পড়ে যায়। কপিল যেমন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে নেটে বোলিং করে যেত, শামিও ঠিক সেভাবেই ম্যাচের আগে নিজেকে তৈরি করে।”
[আরও পড়ুন: আলোর রোশনাইয়ে ফুটে উঠল সেরা ফিল্ডারের নাম, কার গলায় ‘সোনার’ মেডেল?]
কয়েক দিন আগেই সংবাদ প্রতিদিন.ইন-কে শামির ছোটবেলার কোচ বদরুদ্দিন সিদ্দিকি (Badruddin Siddiqui) একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, “ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে নিজেকে নিংড়ে দেওয়ার জন্য শামি নিজের আলি নগরের ফার্ম হাউসে বেশ কয়েকটা পিচ তৈরি করেছে। সেখানে হার্ড লেন্থে বোলিং করার জন্য একেবারে পাটা পিচ তৈরি করা হয়েছে। ঘাসের পিচে শামি কেমন বোলিং করে সেটা গোটা দুনিয়া জানে। ওর সিম মুভমেন্ট একেবারে সোজা থাকে। সেটা আরও ক্ষুরধার করতে একটা পিচে প্রচুর ঘাস রেখেছে। আর একটা পিচ একটু স্লো ধরনের। থমকে আসা পিচে কীভাবে বোলিং করতে হয় সেটা ঝালাই করে নেয় শামি।”
কেন সবার আড়ালে শামি নিজেকে নিয়ে ঘষামাজা করেন? বদরুদ্দিন যোগ করেছিলেন, “শুধু সংসার চালানোর জন্য অর্থ রোজগার করে লাভ নেই। উপার্জন করা অর্থ নিজের উন্নতির জন্যও খরচা করতে হয়। শামি ব্যাপারটা খুব ভালোভাবে জানে। গ্রামের বাড়িতে থাকলে ও সকাল-বিকেল অনুশীলন করবেই। আমি, ওর ভাই মহম্মদ কাইফ এবং উঠতি ছেলেদের সঙ্গে একনাগাড়ে বোলিং করে যায় শামি। বছরের পর বছর এই রুটিন মেনে যাচ্ছে। এরমধ্যে বছর খানেক আগে নিজের ফার্ম হাউসের মধ্যেই একটা জিম বানিয়েছে। এভাবেই ও নিজেকে ফিট রাখে।”
[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপজয়ী থেকে ফুটবলের ‘ব্যাড বয়’! সব বিতর্ক পেরিয়ে ‘ফুটবল রাজপুত্র’, শুধুই এক কিংবদন্তি]
শামির প্রশংসা করতে গিয়ে গাভাসকরও সেই গল্পও শোনালেন। ভারতের প্রাক্তন ওপেনার বলেন, “শুনেছি শামি ওর গ্রামের ফার্ম হাউসে তিনটি আলাদা পিচ তৈরি করেছে। অবসর সময় সেখানেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অনুশীলন করে। একজন পেসারের এটাই তো সবচেয়ে বড় গুণ। ঠিক এভাবেই কপিল ঘণ্টার পর ঘণ্টা নেটে বোলিং করে যেত। সেইজন্য শামি এত সফল। কারণ শামি জানে গতি এবং লাইন লেন্থ ওর এগিয়ে যাওয়ার সম্বল।”
শামির আগুনে পেসের সামনে উড়ে যায় ইংল্যান্ড। বেন স্টোকস ও বেয়ারস্টো বোল্ড হওয়ার, রেহাই পেলেন না মইন আলি। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে গত ম্যাচে ৫৪ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন শামি। এবার সাহেবদের গরিমায় আঘাত হানলেন শামি। আর তাই তো তাঁর ওয়ার্ক এথিক্সে মজে গাভাসকর।