সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: জোড়া হতাশা গ্রাস করল শিলিগুড়িকে। নারী দিবসের সেরা উপহার পেয়েও তা স্মরণীয় করে রাখতে পারল না শিলিগুড়িবাসী। সৌজন্যে মহিলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের শোচনীয় হার। তাই হঠাৎ পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনার মতো কনকাশন সাবস্টিটিউট হিসেবে ঘরের মেয়ে রিচা ঘোষকে ব্যাট করতে দেখেও উদ্বেলিত হতে পারল না শহরের ক্রিকেটপ্রেমীরা। শেষমেষ রিচা আউট হল ১৮ রানে। যদিও তার অনেক আগেই জাতীয় দলের শববাহী গাড়ি হাজির হয়ে গিয়েছিল দোরগোড়ায়। ফলে নিয়মরক্ষার সান্ত্বনা ছাড়া শহরবাসীর জন্য পড়ে থাকল শুধু ফাইনালে রিচার ব্যাট হাতে নামার সুযোগটাই।
প্রথম একাদশে ছিল না রিচা। তবে তানিয়া ভাটিয়া রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়লে ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে রিচার। ব্যাট হাতে মেয়েকে নামতে দেখে খুশি হলেও তা স্থায়ী হয়নি বলেই জানালেন বাবা মানবেন্দ্র ঘোষ। বড় মেয়ে, স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতেই খেলা দেখছিলেন। মেয়েকে প্রথম একাদশে না দেখে একটু মনক্ষুণ্ণ হলেও শেষমেষ মনকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য পরিবর্ত হিসেবে রিচাকে নামতে দেখে ঠোঁটের কোণায় হাসি ফোটে। কিন্তু ততক্ষণে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে। মানবেন্দ্রবাবু বলেন, “মেয়ে না খেলে দল জিতলে বেশি ভাল লাগত। কিন্তু মেয়েকে বলব খেলার মাঠে এমন হতেই পারে। তা আঁকড়ে না থেকে এগিয়ে যেতে হবে।” তবে অজি ইনিংসের প্রথম কয়েক ওভারের পরই ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল বলে মত মানবেন্দ্রবাবু।
[আরও পড়ুন: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ঘোষিত ভারতীয় দল, চোট সারিয়ে ফিরলেন হার্দিক-সহ তিন তারকা]
এদিন ফাইনাল দেখার আয়োজনে অবশ্য কোনও ত্রুটি ছিল না শহরে। বিশ্বকাপের শুরু থেকেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে বড় বড় কাটআউটে জাতীয় দলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার পড়েছিল। রবিবারের মেগা ফাইনালের সকাল থেকেই জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম হলে ম্যাচ দেখার প্রস্তুতিও সারা হয়ে গিয়েছিল। খেলা শুরুর বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকেই সেখানে ভিড় জমতে শুরু হয়। বিভিন্ন কোচিং সেন্টার থেকে শুরু করে বর্তমান ও প্রাক্তন খেলোয়াড়রাও হাজির হন। উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সহকারী সচিব মনোজ বর্মা, শিলিগুড়ি ক্রিকেট লাভার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কৌশিক ঘোষ থেকে অনেকেই। ম্যাচ দেখে প্রত্যেকেই হতাশ।
মনোজবাবু বলেন, “প্রথমে দেশের জয় চেয়েছিলাম। দ্বিতীয়ত ঘরের মেয়ের খেলা দেখতে চেয়েছিলাম। দ্বিতীয়টা পূরণ হলেও প্রথম ও প্রধান ইচ্ছেটা পূরণ হল না। রিচাকে আরও একটু আগে নামালে ভাল হত।” ক্রিকেট লাভার্সের কৌশিকের গলাতেও একই সুর। বলেন, “আমরা চাইছিলাম রিচা খেলুক। জয়ে অবদান রাখুক। খেললো বটে। কিন্তু যখন সে নামে তখন কার্যত কিছু করার ছিল না। দল জিতলে সেলিব্রেশন আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। তবে তা আর হল না।”
[আরও পড়ুন: বিমানযাত্রায় সাধের ব্যাট খুইয়ে সংস্থার উপর ক্ষোভ উগরে দিলেন হরভজন]
The post ফাইনালে আচমকা ব্যাট হাতে রিচা, দলের হারে মাঠে মারা গেল সেলিব্রেশনের আয়োজন appeared first on Sangbad Pratidin.