ইংল্যান্ড: ৩৩৭/৭ (রয়-৬৬, বেয়ারস্টো-১১১, স্টোকস-৭৯)
ভারত: ৩০৬/৫ (রোহিত-১০২, কোহলি-৬৬)
৩১ রানে জয়ী ইংল্যান্ড
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বদলে যাওয়া গেরুয়া রঙের জার্সিটা কি ভারতের জন্য অপয়া? ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে ভারতকে কোণঠাসা হতে দেখে এমন প্রশ্নই যেন মনে ঘুরে ফিরে আসছে। চলতি বিশ্বকাপে যে দলটা অপ্রতিরোধ্য, তারাই কিনা সেমিফাইনালে পৌঁছনোর পথে ধাক্কা খেল?
বল হাতে পাঁচটা উইকেট মহম্মদ শামির। ব্যাট হাতে ওয়ানডে কেরিয়ারের ২৫ তম এবং চলতি বিশ্বকাপের তৃতীয় সেঞ্চুরি রোহিত শর্মার। টানা পাঁচ ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অজি তারকা স্টিথ স্মিথকে ছুঁয়ে ফেলা বিরাট কোহলির। ৫০ রান করতেই রাহুল দ্রাবিড়কে ছাপিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডে-তে সর্বোচ্চ রানপ্রাপক হয়ে যাওয়া তাঁর। সর্বোপরি, ভারতীয় সমর্থক ছাড়াও কোহলিদের জয়ের জন্য পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার সমর্থকদের লাগাতার প্রার্থনা। রবিবাসরীয় এজবাস্টনে টিম ইন্ডিয়াকে রক্ষা করতে এর কোনওটাই কাজে এল না। ফেরানো গেল না ২০০২ সালের ১৩ জুলাই লর্ডসের সেই সুখস্মৃতি (ভারতের ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়)। আজ কমেন্ট্রি বক্সে বসে ভারত-ইংল্যান্ড লড়াই দেখছিলেন নাসের হোসেন এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু আজ নাসেরের কাছে হারই মানতে হল সৌরভকে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেও মর্গ্যানবাহিনীর কাছে পরাস্ত টিম ইন্ডিয়া। আর এরই সঙ্গে শুধু ভারতের সেমিফাইনালে পৌঁছনোর অপেক্ষা দীর্ঘ হল তা না, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার শেষ চারে ওঠার স্বপ্নও কার্যত শেষ হয়ে গেল।
[আরও পড়ুন: বোল্টের হ্যাটট্রিকের দিনও নয়া রেকর্ড করে নজর কাড়লেন স্টার্ক]
প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্তটাকে পুরোপুরি কাজে লাগায় ইংল্যান্ড। বেয়ারস্টোর দুর্দান্ত শতরান এবং শেষে বেন স্টোকসের লড়াকু ইনিংস ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল। যে চ্যালেঞ্জ বেশ শক্ত হাতেই গ্রহণ করেছিলেন রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি। কিন্তু তারপরই সব এলোমেলো হয়ে গেল। এমন চাপের পরিস্থিতিতে ঋষভকে নামতে দেখে অবাক হতে হয় বইকী! চার নম্বরের সমাধান হল, এমন কথা এদিনও বলা যাচ্ছে না। কারণ ঋষভও (৩২) তেমনভাবে নজর কাড়তে পারলেন না। পাণ্ডিয়া (৪৫) খানিকটা ঝড় তুলেছিলেন ঠিকই, কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে দলকে জেতানোর লক্ষ্যে ক্রিজ কামড়ে পড়ে থাকতে ব্যর্থ তিনিও। আর ধোনি যে শেষ দিকে কী করার চেষ্টা করছিলেন, সিঙ্গলস নিয়ে কেন কেদারকে এগিয়ে দিচ্ছিলেন বোঝা গেল না। ফলে শতচেষ্টা করেও পাহাড় প্রমাণ রানে পৌঁছনো গেল না।
বিশ্বকাপে ঋষভের অভিষেকের দিনটা চাহাল অন্তত মনে রাখতে চাইবেন না। কারণ এদিনই সম্ভবত জীবনের সবচেয়ে খারাপ বোলিং করলেন তিনি। ১০ ওভারে ৮৮ রান দিয়ে লজ্জার রেকর্ড গড়লেন তিনি। ওয়ানডে বিশ্বকাপে এটাই কোনও ভারতীয় বোলারের সবচেয়ে বিশ্রী পারফরম্যান্স। এর আগে ২০০৩ বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দশ ওভারে ৮৭ রান দিয়েছিলেন জাভগাল শ্রীনাথ। সেই দুঃসহ স্মৃতি উসকে দিয়ে এদিন তাঁকেও ছাপিয়ে গেলেন চাহাল। কিন্তু ক্রিকেটপ্রেমীদের মন খারাপ শামির কথা ভেবে। ওয়ানডে কেরিয়ারে প্রথমবার এক ম্যাচে পাঁচটি উইকেট নিয়েও দলকে জেতাতে পারলেন না তিনি। ১৯৯২ বিশ্বকাপের পর প্রথমবার বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে এদিন যেন অন্যরকম আনন্দে ভাসছে মর্গ্যান অ্যান্ড কোং।
The post ইংল্যান্ডের কাছে থমকাল ভারতের বিজয়রথ, জলে গেল শামি-রোহিতের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স appeared first on Sangbad Pratidin.