পাকিস্তান: ১৯১ (বাবর ৫০, রিজওয়ান ৪৯, বুমরাহ ২-১৯, হার্দিক ২-৩৪)
ভারত: ১৯২-৩ (রোহিত ৮৬, শ্রেয়স ৫৩, শাহিন ২-৩৬)
ভারত ৭ উইকেটে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহালয়ায় পাক সংহার। আহমেদাবাদে ভারতীয় দলের সামনে স্রেফ উড়ে গেল পাকিস্তান (Pakistan)। ১১৭ বল বাকি থাকতে মাত্র ৩ উইকেট খুইয়ে পাকিস্তানের দেওয়া ১৯২ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে গেল টিম ইন্ডিয়া (Team India)। বিশ্বকাপে এর আগে সাত সাক্ষাতেই পাকিস্তানকে হারিয়েছিল ভারত। কিন্তু শনিবারের আহমেদাবাদে রোহিত শর্মারা যে দাপটের সঙ্গে পাকিস্তান দলকে বধ করলেন, সেই দাপট সম্ভবত এর আগে আর কোনও ভারত-পাক ম্যাচে কোনও ভারতীয় দলই দেখাতে পারেনি।
কিন্তু কোন জাদুতে পাক দলকে কার্যত দুরমুশ করে দিল টিম ইন্ডিয়া? কেনই বা বুমরাহদের সামনে খড়কুটোর মতো উড়ে গেলেন বাবররা? বস্তুত গোটা ম্যাচে ভারতীয় দলকে কোনওরকম চ্যালেঞ্জের মুখেই ফেলতে পারলেন না বাবররা। সেটা কি শুধুই ভারতের ভাল পারফরম্যান্স, নাকি ভুল করলেন বাবররাও? পাকিস্তানের হারের পাঁচ কারণ কী?
[আরও পড়ুন: হামাস-ইজরায়েল যুদ্ধ অব্যাহত, তেল আভিভে বিমান বাতিলের মেয়াদ বাড়াল এয়ার ইন্ডিয়া]
১। স্নায়ুর চাপ: বিশ্বকাপে ভারত-পাক ম্যাচ মানেই বাড়তি স্নায়ুর চাপ অনুভব করে পাকিস্তান। বিশেষ করে বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত ভারতকে হারাতে না পারার ব্যর্থতা তাড়া করে পাক ক্রিকেটারদের। যা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। এবারেও সেই চাপ থেকে বের হতে পারলেন না বাবররা।
২। ভারতীয় বোলারদের দাপট: আহমেদাবাদের পিচে তেমন কোনও জুজু ছিল না যে ১৯১ রানে অল আউট হতে হবে। বিশেষ করে নতুন বলে ভালো মতো বল ব্যাটে আসছিল। পাকিস্তান ভাল পার্টনারশিপও করেছিল গোটা দুই। বিশেষ করে বাবর ও রিজওয়ানের জুটি বেশ ভালই বেগ দিচ্ছিল। সেখান থেকে যেভাবে ভারতীয় বোলাররা কামব্যাক করলেন, সেটা এককথায় অভাবনীয়। প্রথমে সিরাজ এবং তার পর বুমরাহ যেভাবে বাবর এবং রিজওয়ানকে (Mohammad Rizwan) আউট করলেন সেটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এত নিখুঁত এবং পরিপূর্ণ বোলিং পারফরম্যান্স সত্যিই সচরাচর দেখা যায় না। ভারতের হয়ে এদিন বুমরাহ, সিরাজ, হার্দিক, কুলদীপ, জাদেজা সকলেই নিলেন দুটি করে উইকেট।
[আরও পড়ুন: দত্তক নেওয়ার আইনি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা কেন! কেন্দ্রকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের]
৩। অধিনায়ক রোহিত: টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে নিখুঁত বোলিং চেঞ্জ। অধিনায়ক রোহিত শুরু থেকেই জানতেন তিনি কী করতে চান। একটা সময় পাক ব্যাটাররা বেশ স্বচ্ছন্দে খেলছিলেন। কিন্তু তখনও রোহিত ম্যাচের রাশ হাত থেকে বেরোতে দেননি। নিজের স্ট্রাইক বোলারদের ফিরিয়ে এনে বাবর-রিজওয়ানদের মতো সেট ব্যাটারদের উইকেট তুললেন। আর উইকেট পাওয়ার পর পাকিস্তান যাতে কোনওভাবে ম্যাচে ফিরতে না পারে সেটাও নিশ্চিত করলেন স্ট্রাইক বোলারদের দিয়ে পাক ইনিংস শেষ করিয়ে।
৪। বাবরদের ব্যাটিং ব্যর্থতা: রোহিতের (Rohit Sharma) অধিনায়কত্ব, ভারতের বোলারদের প্রাপ্য কৃতিত্ব দিয়েও বলতে হয়, পাক দলের এই বিপর্যয়ের জন্য তারা নিজেরাও অনেকাংশে দায়ী। পাকিস্তান হয়তো ভেবেই নিয়েছিল এই মাঠে ৩০০-৩৫০ রান না করলে জেতা যাবে না। সেই চক্করে পাক লোয়ার মিডল অর্ডারের কোনও ব্যাটার ক্রিজে দাঁড়ানোর চেষ্টাই করলেন না। ১৫৫ থেকে ১৯১ এই ৩৬ রানের মধ্যে পাকিস্তান খুইয়ে ফেললে শেষ ৭টি উইকেট। পাকিস্তানের শেষ সাত ব্যাটারের মধ্যে দশের গণ্ডি পেরোলেন মাত্র একজন। তিনি হাসান আলি (১২)।
৫। ভারতীয় ব্যাটারদের দাপট: লক্ষ্য ছিল মাত্র ১৯২ রান। এই ম্যাচে ভারতের জয় নিয়ে হয়তো বিশেষ সংশয় ছিল না। আর বিন্দুমাত্র সংশয় যদি থেকেও থাকে, সেটাও যেন ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিলেন ভারতীয় ব্যাটাররা। বিশেষ করে অধিনায়ক রোহিত যে ৬৩ বলে ৮৬ রানের ইনিংসটি খেললেন, তাতেই পাক কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে ফেলা হয়েছিল। যেটুকু কাজ বাকি ছিল, সেটা করলেন শ্রেয়স আইয়ার। তিনিও করলেন ৫৩ রান।