পুজোর আগে ট্যাটু করাতে হলে আর কিন্তু সময় নেই। ইওর টাইম স্টার্টস নাও। সোহিনী সেনের টিপস।
জমজমাট পুজো প্যান্ডেলে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে কে না চায় বলুন? ছকবাঁধা সাজগোজ যেখানে সেই স্পটলাইটটুকু দিতে অক্ষম সেখানে হাল ধরে ট্যাটু। পৌঁছে দেয় কাঙ্ক্ষিত অ্যাটেনশন-প্রাপ্তির মোহনায়। বছর পাঁচেক আগেও ট্যাটু করিয়ে আসা তরুণ-যুবাদের সাহসিকতার তারিফ চলকে পড়ত বন্ধুবৃত্তে। এখন সেই ট্র্যাডিশনে ভাঁটা। জেন-ওয়াইয়ের সত্তর শতাংশ এখন ট্যাটু পার্লারমুখী। বলা বাহুল্য, পুজোর আগে সেই ক্রেজের হলকা বাড়ে বেশি।
পুজো স্পেশ্যাল বলতে আলাদা কিছু হয় না, এমনটাই অভিমত ‘ক্যারাপেস ট্যাটু অ্যান্ড পিয়ার্সিং স্টুডিও’-র অধিকর্তা কৃষ্ণেন্দু বিশ্বাসের। কৃষ্ণেন্দু জানাচ্ছেন, ট্যাটুর চাহিদা সারা বছর। আলাদা করে পুজোর মোটিফ বিশেষ কেউ করান না। তবে হ্যাঁ, পুজোর আগে পার্লারে ভিড়ের বহর দেখে মাঝে মাঝে তাঁকেও বমকে যেতে হয়। “অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার জন্য ভোর চারটে থেকে হোয়াটসঅ্যাপ করেন ক্লায়েন্টরা। প্রি-দুর্গাপুজো থেকে প্রি-কালীপুজো এই ক্রেজটা চলে। এর আগে শ্রাবণ মাসে শিবের ট্যাটু করার চাহিদা বাড়ে,” বলছেন কৃষ্ণেন্দু।
[ আরও পড়ুন: হিন্দি ছবিতে হাতেখড়ি অরিন্দম শীলের, থাকছেন দুই সুপারস্টার! ]
অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবার পুজো সংক্রান্ত একটা ট্যাটুর স্মৃতি এখনও উজ্জ্বল। ‘সারা’স গ্ল্যামার হাব’-এর ম্যানেজার অনির্বাণ জানাচ্ছেন, গত বছর এক ভদ্রলোক তাঁদের পার্লার থেকে হাতে প্যান্ডেলের ট্যাটু করিয়ে যান। তিনি এক ডেকোরেশন সংস্থার মালিক। তাঁদের তৈরি এক প্যান্ডেল কোনও এক সংস্থার ‘সেরা প্যান্ডেল’ খেতাব জেতে। সেই স্মৃতিটুকু সারা জীবন নিজের সঙ্গে ও অঙ্গে রেখে দিতে চেয়েছিলেন তিনি!
‘স্টাইল এন চিক ফ্যামিলি স্যালঁ অ্যান্ড অ্যাকাডেমি’-র পরিচালক স্বাতী মিত্র বলছেন, সব কিছু আপনাকে ছেড়ে যেতে পারে, ট্যাটু নয়। “ট্যাটুর সঙ্গে যে বন্ডটা তৈরি হয় সেটা পার্মানেন্ট। ইটস আ কমিটমেন্ট টু ইওরসেলফ।” সে কারণেই ট্যাটুর এত রমরমা। নতুন আঙ্গিকে মা দুর্গা আঁকাচ্ছেন তাঁর ক্লায়েন্টরা। এ ছাড়াও নারী স্বাধীনতার বিভিন্ন মোটিফ, থ্রি-ডি কনসেপ্টের ট্যাটু ইন, জানালেন স্বাতী।
পুজোর আগে ট্যাটু করাবেন কি না, এই দোনামনায় না ভুগে নিজের দেওয়া চ্যালেঞ্জটা অ্যাক্সেপ্ট করেই আসুন। কারণ,
- পুজো এসেছে বলেই বাই উঠলে কটক ছোটা নৈব নৈব চ। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, আপনি প্রস্তুত কি না। উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে মোটিফ খুঁজুন এবং পার্লারে যান। ‘কিছু একটা করিয়ে নিলেই হল’ মেন্টালিটি ট্যাটুর ক্ষেত্রে খাটে না। মনে রাখুন, সারা জীবন ঘর করতে চলেছেন ওই নকশার সঙ্গে।
- নিশ্চিত করাবেনই, এমন মানসিকতা থাকলে, পারলে এক্ষুনি গিয়ে শরীরে খোদাই করিয়ে আসুন কাঙ্ক্ষিত ডিজাইনখানা। ট্যাটু শুকোতে ২৫-৩০ দিন লেগে যায়। অর্থাৎ, হাতে সময় কম।
- বড় ডিজাইন এ মুহূর্তে না করাই ভাল। শুকোতে সময় লাগবে।
- এখন পায়ে ট্যাটু করানোর সিদ্ধান্ত না নেওয়া মঙ্গল। কারণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, রোদ-বৃষ্টির খামখেয়াল টু বি কন্টিনিউডের দিকে। রাস্তার নোংরা জলে পা ভিজে গেলে মুশকিল।
- ট্যাটু করালে যতটা সম্ভব গা-ঢাকা ও ঢিলে জামা পরার চেষ্টা করুন। ছাতা ব্যবহার করতে ভুলবেন না। ইউভি রে ট্যাটু হালকা করে দেয়। ইনকড সেলগুলো ভেঙে দেয়। এছাড়াও রোদের তাপে তারতম্য দেখা দিতে পারে ট্যাটুর রঙের গভীরতা ও ধরনে।
- ভিড় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। পারলে পুজোতেও। ধাক্কা বা ঘষাঘষিতে সদ্য ট্যাটু করানো অংশটুকুর চামড়ায় সংকোচন-প্রসারণ ঘটে ইনকড সেল ভেঙে যেতে পারে।
- পুজোর আগে স্কিনকেয়ার রেজিমে নতুন লোশন বা সানস্ক্রিন অ্যাড হয়েছে? ঘুণাক্ষরেও ট্যাটু করা অংশের উপর লাগাবেন না। ট্যাটু আর্টিস্টের পরামর্শ অনুসারে ক্রিম ও বাম ব্যবহার করুন। ট্যাটু শুকিয়ে যাওয়ার পরেও।
[ আরও পড়ুন: ‘কেন শুধু শাড়ি পরব আর খোঁপা করব’, প্রথা ভাঙার গান ইমনের গলায় ]
The post শরীরে শোভা পাচ্ছে দুর্গা-ট্যাটু, নতুন ফ্যাশনে মাতোয়ারা তিলোত্তমা appeared first on Sangbad Pratidin.