অর্ণব আইচ: কোনও বড় গোলমালের খবর এলেই এবার থানায় থানায় বাজবে ‘পাগলা ঘন্টি’। সাইরেনের ভোঁ শুনেই থানার চত্বরে এসে দাঁড়াবেন পুলিশকর্মীরা। এখন মূলত জেলগুলির ভিতরেই কোনও আপৎকালীন সমস্যা হলে বা বন্দি পালানোর ঘটনা ঘটলে বেজে ওঠে ‘পাগলা ঘন্টি’। ওই শব্দ শুনেই সতর্ক হয়ে ওঠেন জেলের কর্মী ও আধিকারিকরা। এবার সেই আদলেই আপৎকালীন প্রয়োজনে সতর্ক করা হচ্ছে পুলিশকে।
লালবাজার জানিয়েছে, কোনও বড় ঘটনা ঘটলে থানার পুলিশ আধিকারিক ও পুলিশকর্মীদের অনেক সময়ই জড়ো করতে সময় লাগে। আবার একইভাবে কখনও থানায় উন্মত্ত জনতা ঢুকে পড়লে অনেক সময়ই অতর্কিতে তাদের সামনে পড়ে পুলিশকর্মীরা বুঝে উঠতে পারেন না। তাই এবার কলকাতার থানাগুলিতে ‘পাগলা ঘণ্টি’ চালু করার ব্যবস্থা করছে পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
আসলে বস্তুটি একটি হুটার বা সাইরেন। থানাগুলির কোন তলার কোন দেওয়ালে তা বসালে থানার আনাচকানাচে সেই শব্দ পৌঁছবে, তা নিয়ে সমীক্ষা শুরু করেন বিশেষজ্ঞরা। সেই মতোই বৈদ্যুতিক তারের বিন্যাসের কাজ শুরু হয়। একেকটি ‘পাগলা ঘণ্টি’ কেনা ও তা বসানো বাবদ খরচ হচ্ছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। পুলিশের এক কর্তা জানান, কিছুদিন আগেই বেহালায় বড় ধরনের গোলমালের ঘটনা ঘটেছে। উন্মত্ত জনতার হাতে পুড়েছে পুলিশের গাড়ি ও বাইক। সকালে ওই ঘটনা ঘটার পর বেহালা চৌরাস্তায় পৌঁছতে সময় লাগে পুলিশের।
[আরও পড়ুন: ‘আগামী বছর এখানেই আপনাদের সামনে আসব’, লালকেল্লার ভাষণে INDIA-কে বার্তা মোদির ]
এর আগেও দেখা গিয়েছে, এলাকায় কোনও বড় ঘটনা ঘটলে একসঙ্গে থানার বাহিনী জড়ো করতেই সময় লাগে। অনেক সময়ই পুলিশকর্মী ও আধিকারিকরা নিজেদের বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন। সেই ক্ষেত্রে প্রত্যেককে বেতার মেসেজ পাঠিয়ে বা ফোন করে ডাকতে হয়। থানার বাহিনী যাতে একসঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারে, তার জন্যই কোনও বড় ঘটনার পর থানার ওসি বা অতিরিক্ত ওসির নির্দেশেই বেজে উঠবে ‘পাগলা ঘন্টি’।
ক্রমাগত বেজে চলা হুটারের শব্দ কানে এলে সঙ্গে সঙ্গে থানার মধ্যে একটি বিশেষ জায়গায় জড়ো হতে হবে সবাইকে। এরপর আধিকারিকদের নির্দেশ অনুযায়ী রওনা হতে হবে ঘটনাস্থলে। সম্প্রতি বেহালায় গোলমালের সময় ভাঙচুর হয় ট্রাফিক গার্ডও। আবার এর আগেও কলকাতার একাধিক থানা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। অনেক সময়ই দেখা যায় যে, উন্মত্ত জনতা থানায় জড়ো হয়ে গোলমাল করতে শুরু করার সময় তৈরি হয়ে থাকেন না পুলিশকর্মীরা। কিছু ক্ষেত্রে বাধাহীন হয়েই থানায় হামলা চালায় জনতা। পুলিশকর্তাদের মতে, এবার জনতা থানায় জড়ো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাগলা ঘন্টি বা সাইরেন বাজলেই অবস্থা বুঝে পুলিশকর্মীরা একসঙ্গে তাদের বাধা দিতে পারবেন। ইতিমধ্যেই কয়েকটি থানায় এই সাইরেন বা পাগলা ঘন্টি বাজানোর মহড়াও হয়ে গিয়েছে। শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে কত সময়ের মধ্যে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের জড়ো হতে হবে, তাও মহড়ার মধ্যে রাখা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।