shono
Advertisement

মণিপুর হিংসার নেপথ্যে মায়ানমারের অনুপ্রবেশকারীরা! সরকারি রিপোর্টে উদ্বেগ

মণিপুরে সক্রিয় রয়েছে প্রায় ২৫টি কুকি জঙ্গি গোষ্ঠী।
Posted: 02:32 PM Jun 21, 2023Updated: 02:32 PM Jun 21, 2023

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাতিদাঙ্গায় জ্বলছে মণিপুর। হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত হিংসায় নিহত একশোরও বেশি মানুষ। এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়িয়েছে মণিপুর সরকারের এক রিপোর্ট। সেখানে বলা হয়েছে, রাজ্যে মায়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ ঘটছে। প্রায় ২ হাজার অনুপ্রবেশকারী রয়েছে রাজ্যটিতে।

Advertisement

সম্প্রতি মণিপুর হিংসা নিয়ে একটি রিপোর্ট দাখিল করেছে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের বিজেপি সরকার। উদ্বেগ বাড়িয়ে ক্যাবিনেট সাবকমিটির ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মায়ানমার থেকে আসা প্রায় ২ হাজার অনুপ্রবেশকারী রয়েছে মণিপুরে। ভারতের জমিতে রীতিমতো গ্রাম বানিয়ে ফেলেছে তারা। সরকারের বহু চেষ্টা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট শিবিরে যেতে চাইছে না তারা। জনজাতি বিষয়ক এবং পাহাড় উন্নয়ন মন্ত্রী লেটপাও হাওকিপের নেতৃত্বে থাকা সাব কমিটির রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২৯ মার্চ ও ১ এপ্রিল সেনাপতি ও চূড়াচাঁদপুর জেলায় অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে দেখা করেছেন তাঁরা। সবমিলিয়ে, ২৪ এপ্রিল দাাখিল করা ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজ্যের ৪১টি এলাকায় ২ হাজার ১৮৭ জন অনুপ্রবেশকারী রয়েছে।

উল্লেখ্য, মণিপুরে সক্রিয় রয়েছে প্রায় ২৫টি কুকি জঙ্গি গোষ্ঠী। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মতে, এই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদত দিচ্ছে চিন ও আইএসআই। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত আটশোরও বেশি অত্যাধুনিক রাইফেল ও এগারো হাজার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও, পাহাড়ে রয়েছে মাদকচক্রের ঘাঁটি। মায়ানমার হয়ে সেই মাদক পৌঁছে যায় গোটা বিশ্বে। 

মণিপুরে বিভিন্ন জনজাতি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি ও ভয়ংকর সন্ত্রাসবাদী লড়াই চালিয়েছে এই রাজ্যের নাগা-তাঙ্খুল উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ। কংগ্রেস আমলে নাগা-তাঙ্খুল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি রিশাং কেইশিং দীর্ঘদিন মুখ‌্যমন্ত্রী ছিলেন। পাহাড় এলাকার নাগা গ্রামগুলিতে ঘুরলে বোঝার উপায় নেই যে, আদৌ এই অঞ্চলগুলি দেশের সীমানার মধ্যে কি না। আইজ‌্যাক ও মুইভার এনএসসিএন-এর অনুগামীরা এসব অঞ্চলে কার্যত সার্বভৌম ক্ষমতা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।

[আরও পড়ুন: মোদি জমানায় ৯ লক্ষ চাকরি! বেকারত্ব নিয়ে কংগ্রেসের পালটা পরিসংখ্যান প্রকাশ কেন্দ্রের]

কুকি-মেতেই সংঘর্ষে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অশান্ত মণিপুর (Manipur)। ‘মেতেই’ সংখ‌্যাগরিষ্ঠ উপজাতির তফসিলি জাতির স্বীকৃতির দাবি নিয়ে আন্দোলন ওই ছোট্ট রাজ্যে নাগা-কু‌কি জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে পালটা প্রত‌্যাঘাতের জন্ম দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১২০ জনের। আহতের সংখ্যা হাজারের বেশি। ঘরছাড়া কয়েক হাজার মানুষ। কিছুদিন আগেই শান্তি ফেরাতে মণিপুর সফর করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। যদিও তারপরেও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। বেশ কিছু এলাকায় নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়েছে।

মণিপুর ট্রাইবাল ফোরাম (MTF) নামের রাজ্যের কুকি সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী একটি সংগঠনের দাবি, নিহতদের মধ্যে ৭০ জনই তাদের সমাজের অন্তর্গত। আহতদেরও বেশিরভাগই কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার কুকিদের জীবন রক্ষায় ব্যর্থ। তাই কুকিদের জীবন বাঁচাতে সেনা শাসন ছাড়া উপায় নেই। ওই সংস্থাটির তরফে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে দাবি করা হয়, অবিলম্বে মণিপুরকে পুরোপুরি সেনার হাতে তুলে দেওয়া হোক। সংস্থাটি সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত শুনানির আরজি জানায়। কিন্তু বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ সেই আরজি ফিরিয়ে দিয়ে বলেন, এই মামলা দ্রুত শোনার বিষয় নয়। মণিপুরে যা চলছে তা নিছকই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিজনিত সমস্যা।

[আরও পড়ুন: অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন পাকা, আমন্ত্রিত প্রধানমন্ত্রী মোদি! জেনে নিন কবে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement