সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষপর্যন্ত বিহারের (Bihar) মসনদে কে বসবেন, নীতীশ কুমারই (Nitish Kumar) প্রত্যাবর্তন করবেন কিনা তা নিয়ে এই মুহূর্তে জল্পনা তুঙ্গে। কোন কোন ফ্যাক্টর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে আলোচনা চলছে তা নিয়েও। এই পরিস্থিতিতে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এবারের নির্বাচনে অন্যতম এক ফ্যাক্টর হতে চলেছে, বেআইনি মদ বিক্রির ইস্যু। অভিযোগ, রাজ্যে দ্রুত হারে বেড়েছে মদের চোরাচালান (Illicit liquor)। এব্যাপারে সরকারের ভূমিকা মানতে পারছেন না স্থানীয় মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, এই মুহূর্তে বিহারে মদ সহজেই লভ্য। যে কেউ গাঁটের কড়ি খরচ করলেই মদ পেতে পারেন।
২০১৫ সালের নির্বাচনে নীতীশ কুমারের অন্যতম নির্বাচনী হাতিয়ার ছিল রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি। মহিলা ভোটারদের নীতীশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি আবার ক্ষমতাসীন হলে রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ করবেন। সেবারের নির্বাচনে মহিলা ভোটারদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৫৯.৯২ শতাংশ। এর মধ্যে ৩০টি কেন্দ্রে তা ছাড়িয়ে গিয়েছিল ৭০ শতাংশের গণ্ডি।
[আরও পড়ুন: ‘রামবিলাসের মৃত্যুতে চিরাগের ভূমিকা সন্দেহজনক’, তদন্ত চেয়ে মোদিকে চিঠি জিতেন রাম মাঝির]
ক্ষমতায় এসে কথাও রাখেন নীতীশ। ২০১৬ সালের এপ্রিলে সব ধরনের মদ বিক্রি ও মদ্যপান নিষিদ্ধ হয় বিহারে। কিন্তু সেই ছবি বদলে গিয়েছে। রাজ্যে দ্রুত বেড়েছে মদের চোরাচালান। রাজ্যের মদ-বিরোধী অভিযানের অন্যতম নেত্রী ফুদেনা দেবীর কথায়, ‘‘একসময় আমাদের অধিকাংশের পরিবারের সব উপার্জন খরচ হয়ে যেত মদের পিছনে। পরিস্থিতি বদলে গিয়েছিল নিষিদ্ধকরণের পরে। তবে, এখন আবার সব আগের মতো হয়ে গেছে। নিষিদ্ধ ব্যাপারটা কেবল খাতায় কলমে রয়ে গিয়েছে।’’
গত চার বছরে বিহারে ৪১.০৬ লক্ষ লিটার দিশি ও বিলিতি মদ নষ্ট করা হয়েছে। বহু সময় রোড রোলারের তলায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মদের বোতল। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, আসল ছবি অন্যই ছিল। বহু ক্ষেত্রেই পুলিশের গোডাউন থেকেই মদের বোতল গায়েব হয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। ২০১৮ সালে কাইমুর জেলার পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছিল, সেখানে ১১ হাজার লিটার বোতল নাকি ইঁদুরে খেয়ে ফেলেছে! যা নিয়ে সেই সময় প্রবল হইহই হয়।
[আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দফায় বিহারের ৯৪ আসনে চলছে ভোটগ্রহণ, ভাগ্য নির্ধারণ তেজস্বী-তেজপ্রতাপের]
মদের প্রকোপে গার্হস্থ্য হিংসার যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা অবশ্য এখনও ফিরে আসেনি। কিন্তু এভাবেই ২০১৬-র আগের পরিস্থিতি তৈরি হলে তা আবার আগের চেহারা ফিরে পেতে পারে বলেই আশঙ্কা রাজ্যের মহিলাদের। ফলে এই প্রান্তিক মহিলা ভোটাররা, যাঁরা আগের বার নীতীশকে প্রবল সমর্থন জুগিয়েছিলেন, তাঁরা এবার তা কতটা করবেন তা নিয়ে ধন্দে রাজনৈতিক মহল।