সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্যবসার স্বার্থে সব সীমা অতিক্রম করলেন যোগগুরু বাবা রামদেব (Baba Ramdev)! নিজের সংস্থার তথা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার সুখ্যাতি করতে গিয়ে আধুনিক এবং অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে কুৎসা করতে শোনা গেল তাঁকে। যার জেরে যোগগুরুর উপর বেজায় চটেছে দেশের অন্যতম বড় চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (Indian Medical Association)। যোগগুরুর শাস্তির দাবিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বসল তারা। তাদের দাবি, হয় যোগগুরুর কথা শুনে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা তুলে দেওয়া হোক। আর নাহয়, মহামারী আইনে ওঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হোক।
ঠিক কী বলেছিলেন রামদেব? সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এক ভিডিওতে যোগগুরুকে বলতে শোনা গিয়েছে,”অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা আসলে বোকামি। চিকিৎসার নামে তামাশা চলে। লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে শুধুমাত্র অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খেয়ে।” যোগগুরুর দাবি, করোনার বিরুদ্ধে একের পর এক অ্যালোপ্যাথি ওষুধ ব্যর্থ হচ্ছে কারণ, ওই চিকিৎসাপদ্ধতিতে রোগের আসল কারণ অনুসন্ধানই করা হয় না। যদিও পরে বিতর্কের জেরে এই মন্তব্য নিয়ে সাফাই দিয়েছে তাঁর সংস্থা পতঞ্জলি। রামদেবের সংস্থার দাবি, এটা একটা গোপন বৈঠক ছিল। আর স্বামীজি হোয়াটসঅ্যাপে আসা একটি মেসেজ সকলকে পড়ে শোনাচ্ছিলেন শুধু। তাঁর এই ভিডিও সম্পাদিত এবং ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ছত্তিশগড়ের টিকার সার্টিফিকেটে নেই প্রধানমন্ত্রীর মুখ! বদলে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত]
কিন্তু তাতে চিড়ে ভেজেনি। দেশের অন্যতম বৃহৎ চিকিৎসক সংগঠন বাবা রামদেবের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনের কাছে আইএমএ (IMA) দাবি করেছে,”‘এরকম যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কিছু মানুষ বিদ্বেষমূলক সুযোগসন্ধানী মানসিকতা নিয়ে স্বাস্থ্যযোদ্ধাদের পিঠে ছুরি মারার চেষ্টা করছেন। তাঁরা স্বার্থপরের মতো ব্যবসার স্বার্থে অসাধু, নীতিবিরোধী, প্রতারণামূলক ও দেশপ্রেমহীন অসৎ কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। এরা অ্যালোপ্যাথি ওষুধের বিরুদ্ধে কাদা ছোঁড়েন, আবার অসুস্থ হলেই ঘুরপথে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা করাতে যান।” চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়, রামদেব নিজের সংস্থার বিভিন্ন পণ্যের বিষয়ে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে মানুষজনকে বিভ্রান্ত করেন। করোনিল (Coronil) এবং স্বসারি ওষুধের প্রসঙ্গ টেনে আইএমএ’র বক্তব্য, কঠিন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রামদেব সবাইকে বোকা বানিয়ে অর্থ উপার্জনের পথ খুঁজছেন। চিকিৎসকদের ওই সংগঠনের সাফ কথা, হয় বাবা রামদেবের বিরুদ্ধে মহামারী আইনের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী মামলা করা হোক। আর নাহয় ওঁর কথা শুনে দেশের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা বন্ধ কওরে দেওয়া হোক।