অর্ণব আইচ:বাড়ি ফাঁকা রেখে দুর্গাপুজোর অঞ্জলি দিতে যাবেন না। সন্ধ্যার পর অথবা রাতের দিকে প্রতিমা দর্শন করতে গেলে পরিবারের কেউ বাড়িতে থাকাই ভাল।পুজোর আগে কলকাতাবাসীকে পরামর্শ কলকাতা পুলিশের। কারণ, ফাঁকা বাড়িই যে কোনও সময় ‘টার্গেট’ হয়ে উঠতে পারে দুষ্কৃতীদের। এই সময় কলকাতার বাইরে থেকে চোরেরা আসে। দরজার লক ভেঙে অথবা জানালার গ্রিল খুলে তারা অনায়াসেই ভিতরে ঢুকে পড়তে পারে। আলমারি ভেঙে চুরি করতে পারে টাকা ও গয়না। পুলিশের মতে, সামনে পুজো। তার পরই রয়েছে কালীপুজো, জগদ্ধাত্রীপুজো। এই সময় পুলিশ সাধারণত মণ্ডপ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। সেই সুযোগই নেয় দুষ্কৃতীরা। তাই পুজোর কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই সতর্কতামূলক বার্তা দিয়ে লিফলেট বিলি করতে শুরু করছে লালবাজারের গোয়েন্দা দপ্তর। থানার মাধ্যমে শহরের বিভিন্ন জায়গায় হচ্ছে এই লিফলেট বিলি। যদিও লালবাজারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনমতো এই লিফলেটে কিছু পরিবর্তন করা হতে পারে।
[এক সপ্তাহে দু’বার! ফের বসে গেল টালিগঞ্জ-করুণাময়ী সেতুর একাংশ]
পুলিশের পরামর্শ, পুজোর সময় বাড়িতে বেশি নগদ টাকা, সোনা ও হীরের গয়না না থাকাই ভাল। পুলিশ পুজোর ডিউটিতে ব্যস্ত থাকায় চুরির প্রবণতা এই সময় বেড়ে ওঠে। তাই প্রত্যেকে একসঙ্গে কোনও পুজো মণ্ডপে অঞ্জলি দিতে গেলে অথবা বাড়ি ফাঁকা করে রাতে একসঙ্গে ঠাকুর দেখতে গেলে সহজেই তা চোখে পড়তে পারে দুষ্কৃতীদের। শহরবাসীরা নিজেরা সতর্ক হলে দুষ্কৃতীরা বাড়ির ধারেকাছেও আসার সুযোগ পাবে না। পুলিশ জানিয়েছে, কাঠের জানালার উপর স্ক্রু একেবারেই নিরাপদ নয়। বাড়ির জানালার লোহার গ্রিল যেন শক্ত পাতের হয়। সেগুলি যেন শক্তভাবে পাকা দেওয়ালের সঙ্গে আটকানো থাকে। তাহলে ভাঙার সুযোগ পাবে না দুষ্কৃতীরা। আবার অনেক সময়ই দেখা গিয়েছে, পুরনো বাড়িতে সদর দরজা অনেক রাত পর্যন্ত খোলা থাকে। বিশেষ করে পুজোর সময়। কিন্তু তা অত্যন্ত বিপজ্জনক। সুযোগ বুঝে সদর দরজা দিয়েই হানা দিতে পারে দুষ্কৃতীরা। তাই বাড়ির সদর দরজা বন্ধ রাখাই ভাল। ফেরিওয়ালা-সহ বিভিন্ন বেশেও আসতে পারে দুষ্কৃতীরা। তাই অচেনা কোনও ব্যক্তিকে বাড়ির ভিতর না ঢুকতে দেওয়া শ্রেয়। কখনওই জানালার ধারে মোবাইল ফোন বা মানিব্যাগের মতো মূল্যবান কোনও জিনিস রাখা উচিত নয়। সম্ভব হলে বাড়িতে বার্গলার অ্যালার্ম ও আশপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ।
[শহরে কল সেন্টারের আড়ালে মাদক পাচারচক্রের পর্দাফাঁস, গ্রেপ্তার ৩]
বাড়ির পরিচারক ও পরিচারিকাদের নিয়েও সতর্ক করছে পুলিশ। কারণ, শহরের বহু জায়গায় স্বল্প পরিচিত পরিচারক বা পরিচারিকা বাড়িতে কয়েক মাস কাজ করার পর চুরি করে পালিয়ে গিয়েছে, এমন অভিযোগ এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্গাপুজো বা দীপাবলির আগে শহরের বহু পরিবার আছে, যারা মাত্র কয়েকদিনের জন্য পরিচারক বা পরিচারিকা নিয়োগ করে। তাঁদের মূল কাজ বাড়ি ঝাড়পোছ করা। দেখা গিয়েছে, ভিনরাজ্য থেকে তাঁরা আসেন। তাঁদের মধ্যে মিশে যায় ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতীরাও। সুযোগ বুঝে বাড়ির আলমারি খুলে টাকা, সোনার গয়না, নিয়ে পালায় তারা। সাধারণত আলিপুর, নিউ আলিপুর, ভবানীপুর, টালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট, বড়বাজার, পোস্তা, লেক থানা এলাকায় এই বিষয়টি বেশি দেখা যায়। তাই পুলিশের পরামর্শ, এই ধরনের পরিচারক বা পরিচারিকা নিয়োগের সঙ্গে সঙ্গেই যেন তাদের কোনও পরিচয়পত্রের কপি ও মোবাইল নম্বর সংশ্লিষ্ট থানায় জমা করা হয়। এ ছাড়াও অন্য সময় যে পরিচারক বা পরিচারিকা বাড়িতে কাজ করেন, তাঁদের বিস্তারিত তথ্যও থানায় জানাতে বলা হয়েছে। পরিচারকদের সামনে যাতে কেউ তাঁদের দৈনন্দিন কাজের বিষয়ে আলোচনা না করেন।
The post বাড়ি ফাঁকা রেখে পুজোয় ঘুরতে যাবেন না, সাবধানবাণী কলকাতা পুলিশের appeared first on Sangbad Pratidin.