সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মে মাসের প্রথম দিন। করোনা (Covid-19) আক্রান্ত মা’কে নিয়ে চেন্নাইয়ের (Chennai) রাজীব গান্ধী গভর্মেন্ট জেনারেল হাসপাতালের সামনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছিল আর সীতা দেবীকে। অনেকটা সময় পর অবশ্য ৬৫ বছরের অসুস্থ মা’কে হাসপাতালে ভরতি করাতে পেরেছিলেন পেশায় অটোচালক সীতা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। মা’কে আর বাঁচাতে পারেননি তিনি। কিন্তু এবার মৃত মায়ের স্মৃতিতে করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে ওই হাসপাতালের বাইরে চালু করেছেন ‘অক্সিজেন অটো’ পরিষেবা। যা থেকে এখনও পর্যন্ত প্রয়োজনে অক্সিজেন পেয়েছেন অন্তত ৩০০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। আর সীতার এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই অনেকেই তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আর সীতা দেবীর মা অসুস্থ হয়ে পড়ার পরই মা’কে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অক্সিজেন ছাড়াই অপেক্ষা করতে হয় বেডের জন্য। শেষপর্যন্ত বেড পেলেও মা’কে আর বাঁচাতে পারেননি। আর তারপর থেকে নিজেই অটোতে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করেছেন। এই প্রসঙ্গে সীতা জানিয়েছেন, “আমার মা আর বিজয়ার নিয়মিত ডায়ালিসিস চলত। তবে সেদিন ঠিক সময়ে অক্সিজেন পেলে হয়তো মা’কে বাঁচাতে পারতাম। কিন্তু তা পাওয়া যায়নি। এদিকে মে’র প্রথম সপ্তাহ থেকেই হাসপাতালগুলিতে রোগীদের ভিড় ছিল। অনেককেই বেড পাওয়ার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। তাই শেষপর্যন্ত আমি এই অটো অক্সিজেন পরিষেবা চালু করি।”
[আরও পড়ুন: রাজস্থানের এক জেলাতেই ১০ দিনে করোনা আক্রান্ত তিনশোর বেশি শিশু, বাড়ছে উদ্বেগ]
কিন্তু কীভাবে তিনি সাহায্য করেছেন বাকিদের? জানা গিয়েছে, গত ৬ মে থেকে চালু করা পরিষেবায় এখনও পর্যন্ত ৩০০ জন রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। এজন্য তাঁকে সাহায্য করেছেন আরও অনেকেই। প্রসঙ্গত, তাঁর নিজস্ব একটি এনজিও-ও রয়েছে। সীতাদেবী জানান, অক্সিজেন স্যাচুরেশন কম। তখনই অক্সিজেন প্রয়োজন। এই পরিস্থিতিতে পড়া অনেক করোনা আক্রান্তকেই এই অটোতে বসিয়েছেন তিনি। তারপর তাঁদের অক্সিজেন দিয়েছেন অটোয় রাখা সিলিন্ডারের সাহায্যে। অনেকসময় করোনা আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন অটোতে করেই। তখন আবার ওই রোগীকেও অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। এভাবেই বিপদে পড়া অনেককেই সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন সীতাদেবী। যা জানার পরে দেশবাসী তাঁর এই কাজকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।