সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের ভারতীয় নৌসেনার বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিক্রমাদিত্যে অগ্নিকাণ্ড৷ কর্ণাটক উপকূলে মহড়া চলাকালীন এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে খবর। এখনও পর্যন্ত কারও হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এহেন অত্যাধুনিক জাহাজে কীভাবে অগ্নিকাণ্ড ঘটল, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে নৌবাহিনী।
নৌসেনা সূত্রে খবর, বুধবার যুদ্ধবিমানবাহী রণতরীটিতে আগুন লাগে। বর্তমানে, কর্ণাটকের উত্তর কন্নড় জেলার কারওয়ার বন্দরে রয়েছে আইএনএস বিক্রমাদিত্য। এদিন মাঝ সমুদ্রে মহড়া চালাচ্ছিল রণতরীটি। তখনই আগুন লাগে। নৌসেনার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “জাহাজে মজুত অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থার মদতেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কারও হতাহত হওয়ার কোনও খবর নেই। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: আস্থা নেই জোট শরিকদের, ইস্তফা দিলেন ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি]
এর আগে ২০১৯ সালের এপ্রিলে কারওয়ার বন্দরে ঢোকার মুখে অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়েছিল আইএনএস বিক্রমাদিত্য। সেই ঘটনার মৃত্যু হয়েছিল নৌসেনার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ডিএস চৌহানের। তারপর ফের ২০২১ সালে আগুন লাগে জাহাজটিতে। প্রসঙ্গত, রাশিয়ার থেকে ২৩০ কোটি মার্কিন ডলারে বিমানবাহী রণতরীটি কিনেছিল ভারত। ২৮৪ মিটার লম্বা এবং ৬০ মিটার চওড়া এই যুদ্ধজাহাজটি ২০ তলা বাড়ির সমান উঁচু। ওজন ৪০ হাজার টন। বিক্রমাদিত্যের ডেকে ৩০ টি যুদ্ধবিমান এবং ৬টি হেলিকপ্টার রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। সব মিলিয়ে শত্রুর বুকে কাঁপন ধরাতে এই জাহাজটি যথেষ্ট। ভারত মহাসাগরে চিন ও পাকিস্তানকে রুখে দিতে ভারতের অস্ত্রভাণ্ডারে অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে ‘বিক্রমাদিত্য’।
প্রসঙ্গত, ২০১৩-তে ভারতীয় নৌসেনায় অন্তর্ভুক্ত হয় আইএনএস বিক্রমাদিত্য৷ রুশ নির্মিত এই রণতরীতে রয়েছে অত্যাধুনিক মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান, বারাক মিসাইল-সহ একাধিক ঘাতক অস্ত্র৷ ১৯৮৭-তে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের নৌসেনায় ‘বাকু’ নামে এই জাহাজটি অন্তর্ভুক্ত হয়৷ এরপর ১৯৯২-তে ‘অ্যাডমিরাল গর্শকভ’ নামে এটি অন্তর্ভুক্ত হয় রুশ সেনায়৷ ১৯৯৬ পর্যন্ত রুশ সেনায় কাজ করার পর, ভারতের কাছে জাহাজটি বিক্রির প্রস্তাব দেয় রাশিয়া৷ এই যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিক্রমাদিত্য থেকেই ভূমি থেকে আকাশে হামলায় সক্ষম বারাক-৮ ক্ষেপণাস্ত্রটির সফল পরীক্ষা করে ভারত। আরব সাগরে হওয়া এই পরীক্ষায়, খুবই নীচ থেকে দ্রুতগতিতে ছুটে চলা লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয় বারাক-৮। যার ফলে ভারতের নৌবাহিনী এবং এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ারের শক্তি আরও বেড়ে গিয়েছে বলেই মত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের৷