প্রথম ইনিংস:
নিউজিল্যান্ড: ২৫৯ (ডেভন ৭৬, ওয়াশিংটন ৫৯/৭)
ভারত: ১৫৬ (জাদেজা ৩৮, স্যান্টনার ৫৩/৭)
দ্বিতীয় ইনিংস:
নিউজিল্যান্ড: ২৫৫ (লেথাম ৮৬, ওয়াশিংটন ৫৬/৪)
ভারত: ২৪৫ (যশস্বী ৭৭, স্যান্টনার ১০৪/৬)
১১৩ রানে জয়ী নিউজিল্যান্ড।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ কোন ভারত? স্পিন খেলতে পা সরছে না। চাপের মুখে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে তারকাখচিত ব্যাটিং। মিচেল স্যান্টনারকে ওয়ার্ন বা মুরলীধরনের থেকে কম কিছু মনে হচ্ছে না। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে ১১৩ রানে হারলেন রোহিত শর্মারা। সেই সঙ্গে সিরিজও হাতছাড়া হল। এই প্রথমবার ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতল কিউয়িরা। ঘরের মাঠে ১২ বছর পর টেস্ট সিরিজ হারল ভারত। ৪৩৩১ দিন পর। যা এতদিন ছিল বিশ্বরেকর্ড। সেসব হারানোর সঙ্গে অনেকগুলো প্রশ্ন উঠে গেল ভারতের ক্রিকেট নিয়ে। আরও স্পষ্ট করে বললে টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটিং নিয়ে।
সিরিজ শুরুর আগে 'গুরু' গম্ভীর বলেছিলেন, তাঁর টিম প্রয়োজনে ১০০ রানে অল আউট হতেও তৈরি, আবার একদিনে ৪০০-ও করতে পারে। বিরাট-রোহিতরা বোধহয় প্রথম বাণীটুকুই শুনেছিলেন। বেঙ্গালুরুতে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংস থেমে গিয়েছিল মাত্র ৪৬ রানে। পুণে টেস্টে প্রথম ইনিংসে ভারত করেছিল ১৫৬ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে থামল ২৪৫ রানে। প্রতিবার যে প্রথম সারির ব্যাটারদের ব্যর্থতার পর টেল এন্ডাররা ম্যাচ বাঁচাবেন কিংবা বোলাররা ২০ উইকেট তুলে টেস্ট জেতাবেন, তা নাও হতে পারে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ হারের পর কি সেটা নিয়ে সচেতন হবে গম্ভীর বাহিনী?
ভারতের জন্য লক্ষ্য ছিল ৩৫৯ রান। চতুর্থ ইনিংসে যে কাজটা পাহাড়প্রমাণ সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। ভারতের উপর আরও রানের বোঝা চাপতে পারত যদি না তৃতীয় দিন সকালে জাদেজাদের আঙুল জাদু না দেখাত। নিউজিল্যান্ডকে মাত্র ২৫৫ রানে বন্দি করে দেন ভারতীয় স্পিনাররা। জাদেজা পেলেন ৩ উইকেট। ৪টি শিকার ওয়াশিংটন সুন্দরের। জয়ের জন্য বিরাট রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে প্রথমেই অধিনায়ক রোহিত শর্মার (৮) উইকেট হারায় ভারত। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। আদৌ টেস্ট দলে তাঁর থাকা উচিত কিনা, উঠছে সেই প্রশ্নও।
তার পরও অবশ্য আশা দেখাচ্ছিল যশস্বী জয়সওয়ালের 'বাজবল'। সঙ্গ দিচ্ছিলেন শুভমান গিলও। কিন্তু দলের ৯৬ রানের মাথায় ফিরে গেলেন তিনি। খানিক পরে ৭৭ রান করে আউট হলেন যশস্বীও। ব্যাস, সেখান থেকেই পতন শুরু। বিরাট কোহলির সঙ্গে বোঝাপড়ার অভাবে রান আউট হলেন ঋষভ পন্থ। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অপ্রয়োজনীয় তাড়াহুড়ো কি খুব দরকার ছিল? সেই প্রশ্নের উত্তর মেলার আগেই বিরাট কোহলি। সরফরাজ খানও বেশিক্ষণ টিকলেন না। কিছুক্ষণ লড়াই করলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। তিনি ফিরে যাওয়ার পর রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন মাটি কামড়ে পড়ে রইলেন। যেভাবে ছিলেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্টে। কিন্তু নিউজিল্যান্ড যে বাংলাদেশ নয়, সেটা নতুন করে বলার নয়। তাঁর মধ্যে অশ্বিন ফিরে যাওয়ার পর হার ছিল সময়ের অপেক্ষা। শেষ পর্যন্ত ১১৩ রানে হারল ভারত। মিচেল স্যান্টনার দুই ইনিংস মিলিয়ে তুললেন ১৩ উইকেট।
এখনও বাকি একটি টেস্ট। সেটার পরিণতি আশঙ্কা জাগিয়ে তুলছে। প্রশ্ন অনেক, উত্তর ধারেকাছেও নেই। এর মধ্যে ঘোষিত হয়েছে বর্ডার গাভাসকর ট্রফির দল। যেখান থেকে গত দুবারই জিতে এসেছে টিম ইন্ডিয়া। এবারের ফলাফল সম্পর্কে কি নিউজিল্যান্ড সিরিজ অশনি সংকেত দিয়ে রাখল?