সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতেই জন্ম। ভাগ্যের ফেরে পরিচয় হয় পাকিস্তানের নাগরিক। কিন্তু সে পরিচয় এক্কেবারেই চান না মহম্মদ কাদার। তিনি চান ভারতের নাগরিকত্ব। সেই আবেদন জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
ঠিক যেন সিনেমার গল্পের মতো মহম্মদ কাদারের জীবন। জন্ম তাঁর এই দেশের মীরাটে ১৯৫৯ সালে। আট বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে গিয়েছিলেন পাকিস্তানে। সেখানে মায়ের আত্মীয়রা থাকতেন। পাকিস্তানে থাকাকালীনই কাদারের মায়ের মৃত্যু হয়। তাঁর ভিসাও সময়ও পেরিয়ে যায়। অগত্যা পাকিস্তানেই থেকে যেতে হয় কাদারকে।
প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর পাকিস্তানের নাগরিক হিসেবেই নিজের পাসপোর্ট করার কাদার। সেই পাসপোর্ট নিয়ে আটের দশকের শেষের দিকে চলে আসেন মীরাটে। এখানে শেহনাজ বেগম নামের মহিলাকে বিয়ে করেন। ছ’বছরে পাঁচ সন্তানের বাবা হন। তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে। তার অনেক আগেই অবশ্য কাদারের ভিসার সময় পেরিয়ে গিয়েছিল।
[আরও পড়ুন: দেশে করোনা সংক্রমণ কমলেও মৃত্যুহারে উদ্বেগ, একদিনে কোভিডের বলি প্রায় ২০০]
পাকিস্তানে তেমন পড়াশোনা করার সুযোগ পাননি। তাই আইনের মারপ্যাঁচ এড়াতে আর ভিসার মেয়াদ বাড়াননি কাদার। সব ঠিকই চলছিল। ২০১১ সালে আচমকা বিষয়টি বিদেশমন্ত্রকের আধিকারিককে কানে যায়। গ্রেপ্তার করা হয় মহম্মদ কাদারকে। মীরাট একটি আদালত তাঁকে সাড়ে তিন বছর জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। পরে ২০১৫ সালে দিল্লির ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হয়। পাকিস্তানের সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়।
তবে কাদারকে নিজেদের নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ পাক সরকার। সেই অধিকার চানও না কাদার। তিনি চান ভারতের নাগরিকত্ব। জন্মসূত্রে তো তিনি এ দেশেরই বাসিন্দা। এই কারণ দেখিয়েই সর্বোচ্চ আদালতে ভারতের নাগরিকত্ব চেয়ে আরজি জানিয়েছেন মহম্মদ কাদার। উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত ভারতের নাগরিক হওয়ার জন্য আবেদনের সংখ্যা ১০ হাজার ৬৩৫টি। এরপরই জানান, এদের মধ্যে ৭০ শতাংশই পাকিস্তানি। সংখ্যাটা ৭ হাজার ৩০৬।