সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় ১০ মাস ধরে পূর্ব লাদাখে (Eastern Ladakh) মুখোমুখি ভারত ও চিনের সেনাবাহিনী। গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি সবচেয়ে জটিল হয়ে ওঠে প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন ফিঙ্গার এলাকাগুলিতে। সেখানেই অল্পের জন্য যুদ্ধের হাত থেকে রক্ষা পায় পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ। সীমান্তে গনগনে পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন নর্দার্ন কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াই কে যোশী।
[আরও পড়ুন: ইরান ও রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া ভারতীয় নৌসেনার, থাকছে চিনও]
সীমান্তে টানটান পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে জেনারেল যোশী বলেন, “আমরা একদম খাদে দাঁড়িয়েছিলাম। মুহূর্তের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারত। অল্পের জন্য আমরা লড়াই এড়িয়ে গিয়েছি।” লেহতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, গত বছর জুনের ১৫ তারিখ গালওয়ান উপত্যকায় হওয়া সংঘর্ষে চিনা বাহিনীর অন্তত ৪৫ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকেই। যদিও সংঘর্ষে হতাহতের সংখ্যা এখনও গোপন রেখেছে ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’। সীমান্তে পরিস্থিতি কতটা বিস্ফোরক হয়ে উঠেছিল, তার বর্ণনা করে যোশী জানান, চিনের ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’কে সম্পূর্ণ চমকে দিয়ে আগস্টের ২৯ ও ৩০ তারিখ প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে কৈলাস রেঞ্জের একাধিক পাহাড় চূড়া দখল করে ভারতীয় ফৌজ। সেখানে ট্যাংক, রকেট লঞ্চার-সহ অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র মোতায়েন করা হয়। কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চূড়াগুলি দখল করায় ভারতীয় গোলন্দাজ বাহিনীর নিশানায় চলে আসে চিনা ফৌজ। সেই সময় ট্রিগারে চাপ দেওয়াটাই ছিল সবচেয়ে সহজ কাজ। কিন্তু নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখেন ভারতীয় জওয়ানরা।
উল্লেখ্য, চলতি মাসেই প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে ভারত ও চিন। সম্প্রতি ভারতীয় সেনার নর্দার্ন কমান্ড বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিগুলিতে ভারত-চিন সংঘর্ষের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু প্যাংগং হ্রদের (Pangong Tso) উত্তর ও দক্ষিণ থেকে লালফৌজ ও ভারতীয় বাহিনীর পিছু হঠার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ উড়িয়ে ফটোগুলিতে দেখা যাচ্ছে, নিজেদের অবস্থান থেকে সরে যাচ্ছে ভারত ও চিনের ট্যাংক বাহিনী। সৈনিকদের তাঁবু ও বাঙ্কারগুলিও ভেঙে ফেলছে চিনা সেনা। সব মিলিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার এই অংশে আপাতত সংঘাত এড়ানো গিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।