সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইসলামিক মৌলবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোয় মুসলিম বিশ্বের রোষে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (Emmanuel Macron)। শালীনতার সীমা ছাড়িয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত স্তরে অত্যন্ত কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোগান-সহ অনেকেই। এহেন পরিস্থিতিতে ম্যাক্রোঁর সমর্থনে এগিয়ে এল ভারত।
[আরও পড়ুন: পা কাঁপছিল পাক সেনাপ্রধানের, ভারতের ভয়ে অভিনন্দনকে ছেড়ে দেয় পাকিস্তান!]
সম্প্রতি একটি বিবৃতি জারি করেছে ভারতের (India) বিদেশমন্ত্রক। সেখানে ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণের নিন্দা করেছে নয়াদিল্লি। এহেন কাজ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নীতির পরিপন্থী। শুধু তাই নয়, ফরাসি শিক্ষকের উপর জঙ্গি হানার ঘটনটিরও তীব্র নিন্দা করেছে ভারত। বিদেশমন্ত্রক সাফ জানিয়েছে, কোনও পরিস্থিতিতেই সন্ত্রাসবাদী হামলার সপক্ষে যুক্তি খোঁজ উচিত নয়। এদিকে, বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতির পর ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত ইমানুয়েল লেনাইন। এক বিবৃতিতে ফরাসি দূতাবাস বলেছে, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত ও ফ্রান্স সবসময় একে অপরের উপর বিশ্বাস রেখে পদক্ষেপ করতে পারবে।”
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরের ১৬ তারিখ প্যারিসের (Paris) বুকে এক শিক্ষককে মাথা কেটে খুন করে এক চেচেন মুসলিম জঙ্গি। তাঁর ‘অপরাধ’, পড়ুয়াদের বাক স্বাধীনতার পাঠ দিতে হজরত মহম্মদের একটি ব্যঙ্গচিত্র দেখিয়েছিলেন তিনি। ওই ঘটনাকে ‘ইসলামিক মৌলবাদের’ স্বরূপ বলে তোপ দেগেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ওই শিক্ষককে ‘নায়ক’ বলে মন্তব্য করেন। হামলার ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে ‘ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদ’ ও ‘ইসলামিক সন্ত্রাসবাদী হামলা’র মতো শব্দ ব্যবহার করেছেন তিনি। তারপর থেকেই আসরে নেমে পরে মুসলিম দেশগুলি। ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ‘মুসলিম ভীতি’ জাগিয়ে তোলার অভিযোগ এনে তুমুল হইচই শুরু করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোগান।
প্যারিশ হামলার পর মুসলিম মৌলবাদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ফ্রান্সের ছবি কোনওদিনও মলিন হতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়েছিলেন তিনি। মুসলিম মৌলবাদের উত্থান নিয়েও দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। তারপরই তাঁর বয়ান নিয়ে দেখা দেয় বিতর্ক। অযথা ‘মুসলিম ভীতি’ ছড়াচ্ছেন ম্যাক্রোঁ বলেও অভিযোগ করেন তথাকথিত ধর্মনীরপেক্ষরা। এহেন পরিস্থিতিতে প্যারিসের ঘটনা সাফ করে দিয়েছে যে ফরাসি দেশে ক্রমেই শিকড় মজবুত করছে মৌলবাদ।