সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুতেই থামছে না রাশিয়া (Russia) ও ইউক্রেনের যুদ্ধ। সরাসরি ফৌজ না পাঠালেও মস্কোর বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা ও পশ্চিমের দেশগুলি। এহেন পরিস্থিতিতে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরের যুদ্ধের আঁচ পড়েছে ভারতে। আশঙ্কা, যুদ্ধের জন্য রাশিয়া থেকে ভারতে যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া গাড়ির যন্ত্রাংশ সরবরাহ ধাক্কা খেতে পারে।
[আরও পড়ুন: ‘পাথরের মতো মজবুত আমাদের সম্পর্ক’, রাশিয়াকে নিয়ে মন্তব্য চিনের]
সোভিয়েত জমানা থেকেই হাতিয়ারের জন্য মস্কোর উপর নির্ভরশীল নয়াদিল্লি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর অত্যাধুনিক টি-৯০ ট্যাঙ্ক, মিগ-২৯ ও সুখোই সিরিজের যুদ্ধবিমানগুলিও রাশিয়া থেকে কেনা। চুক্তি মাফিক প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে অনেক অস্ত্র আবার দেশেই তৈরি করে ভারত। কিন্তু তা সত্বেও সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের একাংশও আসে রাশিয়া থেকে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে সেই প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর। থমকে যেতে পারে রাশিয়া থেকে ‘৯কে ৩৮ ইগলা’ অতি স্বল্পপাল্লার বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র আমদানির প্রক্রিয়াও। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, নিকট ভবিষ্যতে সেনার প্রয়োজন মেটানোর মতো টি-৯০ ট্যাঙ্ক ও মিগ-২৯-এর স্পেয়ার পার্টস বা যন্ত্রাংশ মজুত করা রয়েছে। কিন্তু আমেরিকা ও ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার কারণে ভবিষ্যতে রাশিয়া থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করা কঠিন হয়ে উঠবে।
এদিকে, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হওয়ার ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই দিশায় পা বাড়িয়ে বেশ কয়েকদফা আলোচনার পরও রুশ কেএ-২২৬টি সামরিক হেলিকপ্টার কেনার প্রক্রিয়া শ্লথ করা হয়েছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন। তবে এস-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম সরবরাহে যুদ্ধের কোনও প্রভাব আপাতত পড়বে না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গত সপ্তাহে ভারতে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ডেনিস অলিপোভ জানিয়েছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে ভারতকে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহে বিলম্ব করবে না রাশিয়া। ইতিমধ্যেই রাশিয়া থেকে দু’টি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা ভারতে এসে পৌঁছেছে। আগামী এপ্রিলে আরও তিনটি এসে পৌঁছনোর কথা।
উল্লেখ্য, গতবছরের গোড়ার দিক থেকেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা মিসাইল সিস্টেম ‘এস- ৪০০ ট্রায়াম্ফ’ ভারতে পাঠানো শুরু করেছে রাশিয়া। সামরিক বিষয়ে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, এর ফলে এক ধাক্কায় অনেকটাই শক্তি বেড়ে গেল ভারতীয় বায়ুসেনার। শত্রুপক্ষের যুদ্ধবিমান ও দূরপাল্লার ক্রুজ মিসাইল মোকাবিলায় ‘এস- ৪০০’ মিসাইলের বিকল্প নেই। ভারতীয় বায়ুসেনা এমন একটি সময় এই ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পাচ্ছে, যখন প্রতিবেশী চিনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে গোলমাল চলছে। তা নিয়ে লাদাখ, অরুণাচলে এখনও উত্তপ্ত পরিস্থিতি।