সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম খুনে অন্যতম অভিযুক্ত সিয়াম আটক হয়েছে নেপালে। তাকে ধরতে কাঠমান্ডু গিয়েছিলেন বাংলাদেশের তদন্তকারীরা। কিন্তু খালি হাতেই তাঁরা ঢাকায় ফিরছেন। সিয়ামকে ভারতের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে নেপাল। পাশাপাশি এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডে এক তরুণী-সহ আরও তিনজনের জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, যেহেতু কলকাতায় বাংলাদেশি সাংসদ খুন হয়েছেন তাই ঘটনার তদন্তভার ভারতেরই। এই হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই যৌথভাবে দুদেশ তদন্ত করছিল। অভিযুক্ত সিয়ামকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছে কলকাতা পুলিশও। সেই মতোই সিয়ামকে ভারতের কাছেই হস্তান্তর করেছে নেপাল পুলিশ। কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হোটেল, যেখানে সিয়াম এবং আখতারুজ্জামান শাহিন ছিলেন সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে। ফলে অভিযুক্তকে ছাড়াই ঢাকায় ফিরছে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মহম্মদ হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্তকারী দলটি। এদিকে কলকাতা ও তার আশপাশের অঞ্চলে আনোয়ারুলের দেহাংশ খুঁজতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ঢাকায় আনা হচ্ছে আনোয়ারুল খুনে অভিযুক্ত সিয়ামকে, হেফাজতে চাইছে কলকাতা পুলিশও]
এদিকে, আনোয়ারুলের হত্যায় এক তরুণী-সহ আরও তিন জনের জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশের তদন্ত সংস্থা ডিবি। তাঁদের নাম- তাজ মহম্মদ খান ওরফে হাজি, মহম্মদ জামাল হোসেন ও চেলসি চেরি ওরফে আরিয়া নামের এক তরুণী। জানা গিয়েছে, এই মামলার তদন্তকারীরা ১০ অভিযুক্তের ব্যাঙ্কের হিসেবের তথ্য পেতে আদালতে আবেদন করেছিলেন। সেই তালিকায় রয়েছে ওই তিনজনের নাম। যদিও চেরি ছাড়া এর আগে বাকিদের নাম আলোচনায় ছিল না। এই চেরি ওরফে আরিয়াকেও মূল অভিযুক্ত শাহিনের বান্ধবী হিসেবে চেনে সবাই। আনোয়ারুলকে ১৩ মে হত্যার আগে প্রথম দফায় কলকাতায় এই আরিয়াকে নিয়ে গিয়েছিলেন শাহিন।
এই খুনের ঘটনার পর শিমুল ভুঁইয়া, তানভির ও শিলাস্তি রহমানকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে অভিযুক্ত শিলাস্তি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি তাঁর মোবাইলে মার্কিন প্রবাসী শাহিনের মোবাইল নম্বরটি ‘পিটার পার্কার’ নামে সেভ করেছিলেন। তিনি শাহিনের বান্ধবী ছিলেন। গত জানুয়ারিতেও শাহিনের সঙ্গে ভারতে গিয়েছিলেন শিলাস্তি। সেই সফরে নাকি আরিয়াও ছিলেন। এর মাঝেই খবর ডিএনএ টেস্টের স্যাম্পল দিতে কলকাতায় যাবেন আনোয়ারুলের কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। তিনি ভারতের ভিসা পেয়ে গিয়েছেন। মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহত সাংসদের ব্যক্তিগত সহকারী আবদুর রউফ। তিনি বলেন, "ডরিন ও আমি একসঙ্গে ভারতীয় ভিসা পেয়েছি। ডিবির তদন্ত টিম নেপাল থেকে দেশে ফেরার পর তাদের সঙ্গে কথা বলে কলকাতায় যাব।" তবে এই খুনের রহস্যের জট এখনও খোলেনি।