বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: করোনার (Corona Virus) প্রতিষেধক কাদের দেওয়া হবে বা হবে না, এই বিষয়টিই বর্তমানে কেন্দ্র সরকারের অন্দরের প্রধান আলোচ্য বিষয়। দেশের ৩০ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিলেই দেশে করোনার সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে কেন্দ্র। সেই তালিকায় চিকিৎসক থেকে শুরু করে করোনা-যুদ্ধে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে যারা লড়াই করছেন, তাঁদের ছাড়া আর কাদের প্রতিষেধক দেওয়া হবে সেই তালিকা বা শ্রেণীবিন্যাসেই কালঘাম ছুটছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য কর্তাদের। প্রথম ভ্যাকসিন দেওয়ার তালিকায় ইতিপূর্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং শরীরে অ্যান্টিবডি রয়েছে এমন ব্যক্তিদের রাখা হবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছে জোরকদমে।
করোনার প্রতিষেধক নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে না এবং কাউকেই প্রতিষেধক নেওয়ার ক্ষেত্রে জোর করা হবে না বলেই কেন্দ্র সরকার ঠিক করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের (Ministry of Health) এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “প্রতিষেধক আসার পরে এমন ঘটনাও সামনে আসবে যে অনেকেই তা নিতে চাইছেন না। এমনকী অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছেন, এমন অনেকেও টিকা (Corona Vaccine) নিতে চাইবেন না। তাঁদেরও কাউকে এক্ষেত্রে কোনওভাবে প্রতিষেধক নিতে জোর করা হবে না। কারণ, দেশের সব মানুষকে অর্থাৎ ১৩০ কোটি মানুষকেই যে টিকা নিতে হবে এমন প্রয়োজনই নেই।”
[আরও পড়ুন: ডোকলাম সমস্যা মেটানোর উদ্যোগ, চিন-ভুটান সীমান্ত বিতর্কের সমাধান চায় ভারত]
দেশের সমস্ত নাগরিককে ভ্যাকসিন দেওয় নয়, বরং সংক্রমণের ধারা রুখতে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই কেন্দ্র যে করোনার টিকাকরণ অভিযান চালাবে সেই বার্তাই মঙ্গলবার কেন্দ্র সরকারের তরফে মিলেছে। এদিন দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলেন, “আমি এটা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিতে চাই যে সরকারের তরফে গোটা দেশের মানুষকে করোনার টীকাকরণ করা হবে এমন কথা কখনই বলা হয়নি। টিকাকরণের পুরো বিষয়টি নির্ভর করবে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার উপর। সংক্রমণের ধারাকে রুখতে পারাই আসল কাজ।” সব দেশবাসীকে যে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রয়োজনই হবে না, এবং তার আগেই সংক্রমণ রোখার কাজ হয়ে যাবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে আইসিএমআরের প্রধান ডা. বলরাম ভার্গবের কথাতেও। তিনি জানিয়েছেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য এই ভাইরাসকে আটকানো। সেক্ষেত্রে যারা গুরুতর আক্রান্ত তাঁদের আগে ভ্যাকসিন দেওয়া এবং সংক্রমণের চেনটিকে ভেঙে দেওয়া। তাহলে আর গোটা দেশকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।”
[আরও পড়ুন: স্টেশনে ফিরছে পরিবেশবান্ধব মাটির চায়ের ভাঁড়, রেলমন্ত্রীর নির্দেশে কেন চিন্তিত রেলকর্তারা?]
যারা ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের টীকা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র সরকার এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি বলেও এদিন ভূষণ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “নীতি আয়োগের (স্বাস্থ্য সদস্য) বিনোদ পলের নেতৃত্বে ভ্যাকসিনের জাতীয় কমিটি, যাদের শরীরে অ্যান্টিবডি রয়েছে তাদেরকে টীকা দেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে তারা উপনীত হতে পারেননি।”