সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রিটিশ পার্লামেন্টে কেন্দ্রের কৃষি আইন ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত (India)। মঙ্গলবার ভারতে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নয়াদিল্লি সাফ জানিয়েছে, ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ’ মেনে নেওয়া হবে না।
[আরও পড়ুন: ড্যানিয়েল পার্ল হত্যা মামলায় প্রকাশ্যে এল আইএসআই ও পাক আদালতের যোগসাজশ]
বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, কৃষি আইন নিয়ে চলা বিতর্কে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ব্রিটেনকে কড়া বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “ভোট ব্যাংক রাজনীতির জন্য ব্রিটিশ সাংসদরা যেন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলির অপব্যাখ্যা না করেন।” ভারতে ‘কৃষকদের সুরক্ষা’ ও ‘সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা’ নিয়ে আলোচনায় আগেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে লন্ডনের ভারতীয় হাই কমিশন। মঙ্গলবার হাই কমিশনের তরফে একে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ ও ‘ভুয়ো’ বলা হয়েছে। অন্যদিকে, নয়াদিল্লির এই প্রতিক্রিয়ার পালটা ব্রিটেনের তরফে জানানো হয়েছে, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে।
সোমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দিল্লির কৃষক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্ক হয়। লিবারাল ডেমোক্র্যাট দলের ভারতীয় বংশোদ্ভূত এমপি গার্চ সিংহের আবেদনের ভিত্তিতে পার্লামেন্টে বিতর্কটির উদ্যোগ নেওয়া হয়। অনলাইনে ওই আবেদনের সপ্তাহ খানেকের মধ্যে পার্লামেন্টে বিতর্কের পক্ষে লক্ষাধিক ব্রিটিশ সায় দিয়েছিলেন। প্রায় দেড় ঘণ্টার বিতর্কে ভারত সরকারের তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দিল্লি সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্রিটেনে লেবার পার্টি, লিবারাল ডেমোক্র্যাট এবং স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির একাধিক সদস্য। তাঁরা বলেন, আন্দোলন দমনে ভারত সরকার যে ধরনের পদক্ষেপ করেছে, তা উদ্বেগজনক। পাশাপাশি, সংবাদমাধ্যমের উপরেও ভারত সরকারের ‘কড়াকড়ি’ নিয়ে আলোচনা হয় ওই অধিবেশনে।
বিদেশি আইনসভায় ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আলোচনা বা বিতর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশনের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে দু’পক্ষের মতামতের পরোয়া না করেই ভুয়ো দাবির ভিত্তিতে কেবলমাত্র একপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র এবং তার প্রতিষ্ঠানগুলিকে কালিমালিপ্ত করা হয়েছে।” অবশ্য, পার্লামেন্টের বিতর্কসভায় এমপি-রা এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, ব্রিটিশ সরকার মনে করে তিন কৃষি আইন কার্যকর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে ওই আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কৃষকদের নিরাপত্তাই আলোচনার বিষয়।